মিথুন কর্মকার , আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি:
‘বৈষম্য নিপাত যাক-পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি মুক্তি পাক’ ওই স্লোগানকে সামনে রেখে বৈষম্য দূরীকরণসহ শোষণ, নির্যাতন, নিপীড়ন অব্যাহত রাখা, গুনগত মানহীন মালামাল ক্রয় করে গ্রাহক ভোগান্তির প্রতিবাদে এবং অভিন্ন চাকুরি-বিধি বাস্তবায়নের দাবীতে সারাদেশের সঙ্গে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে পটুয়াখালী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির আওতাধীন আমতলী জোনাল অফিসে কর্মরত সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতি পালন করেছেন।
বিদ্যুৎ ব্যবস্থা ও জরুরী গ্রাহক সেবা সচল রেখে তাদের অন্যান্য সকল সেবা বন্ধ রেখেছেন। এতে ভোগান্তিতে পড়েছে আমতলী পল্লীবিদ্যুৎ এর গ্রাহকরা।
কর্মবিরতি পালনের অংশ হিসেবে মঙ্গলবার সকালে মানববন্ধন ও কর্মবিরতি পালিত হয়েছে। প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে শুরু হওয়া ওই কর্মবিরতি চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। কর্মবিরতিতে উপস্থিত ছিলেন পটুয়াখালী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির আওতাধীন আমতলী জোনাল অফিসের সহকারী মহা ব্যবস্থাপক (এজিএম) মিন্টু রহমান, সহকারী প্রকৌশলী জিয়া উদ্দিন তরফদারসহ অত্র অফিসের সকল পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীর।
কর্মবিরতিতে অংশ নেয়া আন্দোলনকারীরা জানান, পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পদমর্যাদা, ৬মাস পিছিয়ে পে-স্কেল ও ৫ শতাংশ বিশেষ প্রণোদনা প্রদান, এপিএ বোনাস সমহারে না দেওয়া, লাইনম্যানদের নির্দিষ্ট কর্মঘন্টা এবং কাজের জন্য প্রয়োজনীয় লাইনম্যান ও বিলিং সহকারী পদায়ন না করা, যথাসময়ে পদন্নোতি না করা, মাঠ পর্যায়ে কর্মচারীদের চুক্তি ভিত্তিক চাকুরি নিয়মিত না করাসহ বিদ্যুতায়ন বোর্ডের বিভিন্ন অনিয়মের শিকার হচ্ছে সমিতির কর্মকর্তা- কর্মচারীরা।
দীর্ঘদিন ধরে চলা ওইসব শোষন, নির্যাতন, নিপীড়ন বন্ধ করে স্মার্ট ও টেকসই বিদ্যুৎ ব্যবস্থা গঠনের লক্ষ্যে অভিন্ন চাকুরীবিধি বাস্তবায়ন এবং সকল চুক্তিভিত্তিক, অনিয়মিত কর্মচারীদের চাকুরি নিয়মিতকরণের দাবি জানান মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তাদের আন্দোলন চলমান রাখার ঘোষণাও দেয় তারা।
এদিকে পটুয়াখালী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির আওতাধীন আমতলী জোনাল অফিসের কর্মকর্তা- কর্মচারীরা কর্মবিরতিতে থাকায় বিদ্যুৎ ব্যবস্থা ও জরুরী গ্রাহক সেবা সচল রেখে তাদের অন্যান্য সকল সেবা প্রদান বন্ধ রেখেছেন। এতে ভোগান্তিতে পড়েছে আমতলী পল্লীবিদ্যুৎ এর গ্রাহকরা। নানাবিদ সমস্যা নিয়ে গ্রাহকরা গ্রাম থেকে আমতলী বিদ্যুৎ অফিসে এসে কোন প্রকার সেবা না পেয়ে বাড়ী ফিরে যেতে বাধ্য হচ্ছেন।
আমতলী পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের সামনে কথা হয় হলদিয়া ইউনিয়নের তক্তাবুনিয়া গ্রাম থেকে আসা গ্রাহক বজলুর রহমানের সাথে। তিনি বলেন, আজকেসহ গত তিন দিন পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে এসে মিটার সমস্যার কোন সমাধান করতে না পেয়ে বাড়ী ফিরে যেতে হয়েছে। শুনেছি তারা নাকি কর্মবিরতিতে আছেন, সেজন্য এখন আর আমাদের গ্রাহকদের কোন সেবা দিবেন না। এতে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে আমার মত অনেক গ্রাহকদের।