নিজস্ব প্রতিবেদন: পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের নাটোর বাগাতিপাড়া শাখা থেকে নোটিশ দেয়া হয়, নাটোরে ঋণ না নিয়েও সাড়ে ১৬ লাখ টাকার খেলাপির নোটিশ পেয়েছেন ৮৮ কৃষক।
এ নিয়ে গত ৩ জুলাই জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে ভুক্তভোগী কৃষকরা বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেন। এ সময় প্রতিকার চেয়ে ভুক্তভোগীরা জেলা প্রশাসক আবু নাছের ভূঁঞার কাছে স্বারক লিপিও দিয়েছেন।
সরেজমিনে নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলার ভিতরভাগ এলাকা গিয়ে কথা হয় ভ্যানচালক শফিকুল ইসলামের সঙ্গে; তিনি জানান, একটি বাড়ি একটি খামার থেকে ঋণ গ্রহণ না করেও তিনি ১৬ হাজার টাকা ও তার ছেলে ৩২ হাজার টাকার ঋণ খেলাপি হয়েছেন।
শফিকুল ইসলাম বলেন, ১৭ সালে তার বই নিয়ে নেন একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পের কর্মকর্তারা। গত জুন মাসে পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক থেকে দাবি করা হয় তিনি ও তার ছেলে ঋণ খেলাপি। ঋণ না নিয়েও ঋণের দায়ভার তার ওপর পড়েছে। তিনি এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে সংশ্লিষ্টদের বিচার দাবি করেন।
শুধু শফিকুল ইসলামই না । এই গ্রামের ৮৮ জন ঋণ গ্রহণ না করেই সাড়ে ১৬ লাখ টাকার ঋণ খেলাপি বলে অভিযোগ করেন তিনি।
ভিরতভাগ গ্রামের আল আমিন বলেন, ২০১৬ সালে একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পের আওতায় এই গ্রামের ৯৬ জন ৮ হাজার টাকা করে ঋণ গ্রহণ করেন। ২০১৮ সালের মধ্যে সবাই ঋণ পরিশোধ করে পাশ বই জমা দেন। এরপর কেটে গেছে ৫ বছর। আর এই ৫ বছরে একটি বাড়ি একটি খামার দুই দফায় নাম পরিবর্তন করে ২০১৮ সালে আমার বাড়ি আমার খামার এবং ২০২০ সালে পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক হিসাবে রূপান্তর হয়।
৫ বছর পর পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক থেকে ৮৮ জনের নামে সাড়ে ১৬ লাখ টাকা পাওনা দাবি করেছে। জমা নেয়া পাশ বইগুলোর মধ্যে গত ৪ জুন কিছু সদস্যর বই ফেরত দিয়েছে তারা। গ্রাহকরা ঋণ গ্রহণ না করলেও পাশ বইয়ে বিভিন্ন পরিমাণ টাকা ঋণ গ্রহণ ও কিছু টাকা জামাদান দেখানো হয়।
বিষয়টির প্রতিকার চেয়ে গত ২০ জুন বাগাতিপাড়া উপজেলা চত্বরে বিক্ষোভ ও মানবন্ধন করে প্রতিকার পাননি ভুক্তভোগীরা। এর প্রেক্ষিতে গত ৩ জুলাই জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে তারা বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেন।
নাটোরের জেলা প্রশাসক আবু নাছের ভূঁঞা বলেন, ৩ জুলাই ভুক্তভোগীরা তার সঙ্গে দেখা করে ঘটনার প্রতিকার চেয়েছেন। এর প্রেক্ষিতে ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন। তদন্তে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। পাশাপাশি ভুক্তভোগী হতদরিদ্র মানুষরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে না বলে জানান তিনি।
পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের বাগাতিপাড়া গেলে ব্যাংক ম্যানেজার বিষয়টি এড়িয়ে যান। তবে ব্যাংকটি জুনিয়র অফিসার মকবুল হোসেন সময় সংবাদের সঙ্গে কথা বললেও তিনি পাশ বই ৫ বছর ধরে আটকে রাখার বিষয়টি এড়িয়ে যান।
মকবুল হোসেন বলেন, সদস্যরা ১৬ সালে নেয়া ৮ হাজার ঋণ পরিশোধ না করে নতুন করে তাদের নামে ১৫ হাজার টাকা নতুন ঋণ নিয়ে পুরনো টাকা পরিষদ করেছেন।