এক টুকরো আদার এতো গুণ!

লাইফস্টাইল ডেস্ক: আদা একটি উদ্ভিদ মূল, যা মানুষ মসলা এবং ভেষজ ওষুধ হিসেবে ব্যবহার করে। আমাদের দৈনন্দিন জীবনে আদার অনেক ব্যবহার রয়েছে। এ ছাড়া আদা বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যা থেকে মুক্তি দেয়ার জন্য প্রতিকার হিসেবে ব্যবহৃত হয়।

বর্ষাকাল শেষ হলেও আছে বৃষ্টির প্রবণতা। তাই অনেকের ক্ষতিকর ভাইরাসের সংক্রমণ হতে পারে। যে কারণে এ সময় আদা খাওয়া আরও বেশি জরুরি। অন্যদিকে আদা দিয়ে তৈরি পানীয় পান করলে অনেকগুলো সুবিধা পেতে পারেন। আদা কেবল রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতাকেই শক্তিশালী করে না, সেইসঙ্গে ওজন এবং রক্তচাপ কমাতেও সাহায্য করে। চলুন জেনে নিই প্রতিদিন আদা খেলে শরীরে ঘটে-

ওষুধ হিসেবে আদার ব্যবহর
আদিকাল থেকেই ওষুধের বিকল্প হিসেবে আদা ব্যবহার করা হয়। আদা ওষুধ হিসেবে ব্যবহারের একটি দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। এটি হজমে সহায়তা করে, বমি বমি ভাব কমায়, ফ্লু এবং সাধারণ সর্দি-কাশির বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে।
বমি বমি ভাব দূর করে
 
আপনি যদি প্রায়ই বমি বমি ভাব অনুভব করেন তবে আদা আপনার জন্য একটি দুর্দান্ত খাবার। এটি পেটের পেশী প্রশমিত করতে সাহায্য করে এবং পরিপাকতন্ত্রের প্রদাহ কমায়। আদা চা হতে পারে বমি বমি ভাব এবং বমির মতো উপসর্গ থেকে মুক্তি পাওয়ার নিখুঁত উপায়। এ ছাড়া আপনি যদি ভ্রমণ করেন বা চা বানানোর সুযোগ না থাকে তবে আদার একটি ছোট টুকরা চিবিয়ে খেতে পারেন। ইপকার পাবেন।
 
ওজন কমাতে সাহায্য করে
 
আদা ওজন কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আদা। ২০১৯ সালে মানুষ ও বিভিন্ন প্রাণীদের ওপর করা এক গবেষণা অনুসারে, আদার পরিপূরক আমাদের ওজন কমাতে সাহায্য করে। এ ছাড়া কোমর-নিতম্বের অনুপাত এবং অতিরিক্ত ওজন বা স্থূলতায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের নিতম্বের অনুপাত উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস করে।
 
ব্যথা কমাতে সাহায্য করে
আমাদের শরীরে বিভিন্ন জয়েন্টে ব্যথা হয়ে থাকে, আর এ ব্যথা কমাতে সাহায্য করে আদা। গবেষণা অনুসারে, আদা ব্যথা ও অক্ষমতা কমাতে সাহায্য করে। এ গবেষণায় যারা অংশগ্রহণ করেছিলেন তারা সবাই ৩ থেকে ১২ সপ্তাহ পর্যন্ত প্রতিদিন ০.৫-১ গ্রাম আদা গ্রহণ করেছিলেন। আর এদের অনেকেরই হাঁটুর ব্যথাও কমে।
হজম ক্ষমতার উন্নতি করে
 
আমাদের অস্বাস্থ্যকর পাচনতন্ত্র পেটের সমস্যা সৃষ্টি করে। আর এই সমস্যা থেকে বাঁচতে বেশ কয়েকটি প্রাকৃতিক প্রতিকার ব্যবহার করা হয়। এর মধ্যে একটি হলো আদা। আদায় থাকে জিঞ্জেরল নামক একটি উপাদান, যা হজম প্রক্রিয়াকে গতিশীল করতে সহায়তা করে। যারা প্রায়ই বদহজম, পেট ফাঁপা এবং কোষ্ঠকাঠিন্যে ভোগেন তাদের জন্য এটি দুর্দান্ত।
 
শ্বাসযন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো করে
 
ক্রমাগত কাশি বা সর্দি যথেষ্ট অস্বস্তিকর অনুভূতিগুর মধ্যে একটি। এই সমস্যা দূর করতে আদার তৈরি পানীয়ের মতো প্রাকৃতিক প্রতিকারের ওপর নির্ভর করুন। এটি শ্বাসতন্ত্রকে শিথিল করতে এবং ফুসফুসের অতিরিক্ত শ্লেষ্মা অপসারণ করতে সাহায্য করে।
কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়
 
উচ্চ মাত্রার এলডিএল (খারাপ) কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে আদা। ২৬ ট্রায়ালের একটি গবেষণায় গবেষকরা দেখেছেন, আদা সেবন উল্লেখযোগ্যভাবে ট্রাইগ্লিসারাইড এবং এলডিএল (খারাপ) কোলেস্টেরল কমায়।
 
ক্যানসারের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে
 
জিঞ্জেরল এবং অন্যান্য বিভিন্ন অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি যৌগগুলোর কারণে আদার ক্যানসার প্রতিরোধী বৈশিষ্ট্য আছে। কিছু প্রমাণ আছে, বিশ্বস্ত উৎস যে এই যৌগগুলো গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল ক্যানসারের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।
 
এক গবেষণায় দেখা গেছে, কোলোরেক্টাল ক্যানসারের উচ্চ ঝুঁকি আছে এমন ২০ জন মানুষ ২৮ দিন টানা ২ গ্রাম করে আদা খান। গবেষণার শেষে দেখা গেছে, অংশগ্রহণকারীর অন্ত্রের আস্তরণে প্রত্যাশিত পরিমাণের তুলনায় কম ক্যানসারের জীবাণু পাওয়া গেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *