কালকিনি(মাদারীপুর) প্রতিনিধিঃ
মাদাীপুরের কালকিনি ও ডাসার উপজেলায় ১৯৯ টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বঙ্গবন্ধু নামে তিনটি বই শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে দেওয়া হয়। মন্ত্রণালয় থেকে দেওয়া তিনটি বইয়ের দাম ৩ হাজার টাকা করে ৪ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা মূল্যে হয়। কিন্তু বইয়ের দাম হওয়া উচিত ছিল সর্বোচ্চ দেড় হাজার টাকা। আর এই অতিরিক্ত দামে বই বিক্রির ৪ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে শিক্ষা কর্মকর্তা মো. বদিউজ্জামানের বিরুদ্ধে। তবে শিক্ষা কর্মকর্তা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন বইয়ের ব্যাপারে ইউএনও স্যার ও ডিপিও স্যার জানেন। এখনও টাকার ব্যাপারে কোন সিদ্ধান্ত হয় নাই।
জানা যায়,বই বিক্রির টাকা মাদারীপুর জেলা শিক্ষা অফিসার হয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে যাবে। কালকিনি ও ডাসার উপজেলায় ১৯৯টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে প্রায় ১৫০টি বিদ্যালয় থেকে এই টাকা উত্তোলন করা হয়। ২০২৩ -২৪ অর্থ বছরের স্লিপের টাকা থেকে সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তারা ক্লাস্টার ভিত্তিক প্রধান শিক্ষকদের কাছ থেকে জুলাই মাসে টাকা উত্তোলন করে। বই তিনটির নাম- ভাইয়েরা আমার,আহবান ও সকলের তরে সকলে আমরা। বই তিনটির লেখক সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সম্পাদনা করেন সাবেক প্রধান মন্ত্রীর স্পিচ রাইটার (সচিব) নজরুল ইসলাম ও জিনিয়াস প্রকাশনী।
প্রাথমিক শিক্ষা অফিস ও বিদ্যালয় সুত্রে জানা গেছে, ৩টি বইয়ের সর্বোচ্চ দাম হবে ১৫ থেকে ১৬ শত টাকা হবে। আর এই তিনটি বইয়ের দুইটি দাম ৮ শত টাকা করে ১৬ শত ও একটি বইয়ের দাম ১৬ শত টাকা লেখা মোট ৩ হাজার ২শত টাকা। সরকার পতন হয়ে গেছে এখনও টাকা অফিসে জমা আছে। সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তারা স্লিপের টাকা থেকে নিয়ে গেছে । কিন্তু তারা বলছে ২০২৪-২৫ অর্থ বছরের স্লিপের টাকা থেকে সমন্বয় করা হবে।
টাকা আত্মসাৎ এর ব্যাপারে নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক প্রধান শিক্ষক জানান শেখ মুজিব নিয়ে নামে লেখা তিনটি বই যার দাম হবে ১৫ বা ১৬ শত টাকা কিন্তু সেই বইয়ের জন্য ৩ হাজার টাকা তাও আবার স্লিপের টাকা দিয়ে কিনতে হয়েছে। তবে সরকার পরিবর্তন হয়েছে এখন আমাদের টাকাটা ফেরত দিলে আামাদের বিদ্যালয়ের উন্নয়নের কাজে লাগবে। শিক্ষা কর্মকর্তা ও সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা স্যারেরা বলে বইয়ের টাকা মন্ত্রণালয়ে পাঠাতে হবে। যেখানে সরকারই পরিবর্তন হয়েছে সেই টাকা কি ভাবে নিবে বা পাঠাবে? আমাদের মনে হয় এই টাকা আত্মসাৎ করবে।
কালকিনি উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা আনিচুর রহমান মিয়া বলেন বঙ্গবন্ধুর উপর লেখা ৩টি বইয়ের মুল্যে ২০২৩-২৪ অর্থ বছরের স্লিপের টাকা থেকে নেওয়া হয়েছে। কিন্তু ২০২৪-২৫ অর্থ বছরের স্লিপের টাকা থেকে সমন্বয় করা হবে।
টাকা আত্মসাৎ এর অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে শিক্ষা কর্মকর্তা মো. বদিউজ্জামান বলেন , শিক্ষা মন্ত্রণায় থেকে যে তিনটি বই এসেছে তা প্রত্যেকটি স্কুলে দেওয়া হয়েেেছ কিন্তু কোন স্কুল থেকে টাকা নেওয়া হয় নাই।
চলতি অর্থ বছরের ( ২০২৪-২৫) স্লিপের টাকা থেকে সমন্বয় করা হবে। বইয়ের ব্যাপারে ইউএনও (কালকিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ) স্যার ও ডিপিও (মাদারীপুর জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা) স্যার জানে। এখনও টাকার ব্যাপারে কোন সিদ্ধান্তু হয় নাই।
এ ব্যাপারে কালকিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উত্তম কুমার দাস বলেন, আমি বই এর কিছু জানি না। যাদি আমার কথা বলে থাকে শিক্ষা কর্মকর্তা তা হলে কথাটা সঠিক না। আমি শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে জেনে নেই সে কি জন্য আমার নাম বললো।
টাকা ব্যাপারে জানতে চাইলে মাদারীপুর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা তাপস কুমার পাল বলেন, আমি বইয়ের কথা জানি তবে টাকাতো কম্পানিকে দিয়ে দেওয়ার কথা। তবে দিয়েছে কি না জানি না। মন্ত্রণালয় থেকে প্রতি বছর বই দেয় আর সেই বই এর মূল্য স্লিপের টাকা থেকে পরিশোধ করা হয়।