খাদ্যগুদামে ভি ডব্লিউ বি (শিশুকার্ড) চাল চুরির অভিযোগ

 

স্টাফ রিপোর্টার :

ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলায় খাদ্যগুদামে ভিডব্লিউবি ( শিশুকার্ড) চাল ওজনে কম দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত শনিবার খাদ্যগুদামের গেটের বাহিরে মেইন রাস্তায় দুপুর ১২ টার দিকে নসিমন গতিরোধ করে এ অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়।
উপজেলা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তর অসচ্ছল নারীদের খাদ্য সহায়তা বাবদ প্রত্যেককে প্রতি মাসে ৩০ কেজি করে চাল সরবরাহ করে থাকে। উপজেলায় ৬ ইউনিয়নে ২ হাজার দুইশত একান্ন জন সুবিধাভোগী রয়েছেন। এসব চাল খাদ্য অধিদপ্তর কর্তৃক উপজেলা খাদ্যগুদাম থেকে সরবরাহ করা হয়। বেশ কিছুদিন ধরে সুবিধাভোগী নারীদের কাছ থেকে অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে খাদ্যগুদাম থেকে প্রতি বস্তা চালে গড়ে এক কেজি দুইশত পঞ্চাশ থেকে তিনশত গ্রাম করে কম দেওয়া হচ্ছে।কুরবানি ঈদের আগে এক সপ্তাহ ধরে উপজেলার ৬ টি ইউনিয়নে সুবিধাভোগী নারীদের মধ্যে চাল বিতরন করেন। গত শনিবার পাচুড়িয়া ইউনিয়নের সুবিধাভোগী নারীদের ভি ডব্লিউ বি চাল গোডাউন থেকে নসিমনে বের হওয়ার সময় প্রেসক্লাব আলফাডাঙ্গা’র স্থানীয় সাংবাদিকেরা গোডাউনের সামনে গতিরোধ করে।একপর্যায়ে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম, গ্রাম পুলিশ রসুল ও নসিমন চালক প্রতি বস্তাতেই চাল কম দেওয়া হয়েছে স্বীকার করেন এবং ঐ নসিমনে ৬৮ বস্তা বোঝাই ছিল ।ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান গুদাম কর্মকর্তাকে তাৎক্ষণিক মোবাইলে জানালে বিষয়টি নিয়ে জানাজানি না হয়, সেজন্য স্থানীয় সাংবাদিকদের ম্যানেজ করতে বলেন খাদ্যগুদামে কর্মকর্তা সানাউল্লাহ।
পাচুড়িয়া ইউনিয়ন অফিসে গিয়ে দেখা যায়, বরাদ্দকৃত ৩৩৯ বস্তার মধ্যে ২১০ বস্তা চাউলে বস্তাসহ ৩০ কেজি ৩০০-৪০০ গ্রাম স্হলে ২৯ কেজি ০৫০-০৭০ গ্রাম পাওয়া যায়।এদিকে চাউল বিতরন কমিটির সভাপতি ইউএনও সারমীন ইয়াছমীনকে সারা দিনে অনেক বার ফোন দিলে ফোন রিসিভ করেন নাই।পরে জেলা প্রশাসক কামরুল আহসান তালুকদারের হোয়াসঅ্যাপ সকল তথ্য , জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. ফরহাদ খন্দকার এবং স্হানীয় সরকার ডিডিএলজি রওশন চৌধুরীকে সকল অভিযোগের তথ্য দিলে দিন শেষে ঐ খাদ্য কর্মকর্তা সানাউল্লাহ কম দেওয়া ৬৮ বস্তা ফেরত রেখে সঠিক ওজনের ৬৮ বস্তা চাউল এবং ইউনিয় অফিসের ২১০ বস্তার ভূর্তকি ৭ বস্তা ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সাইফুল ইলামের হাতে বুঝে দেন।আরো খোজ নিয়ে জানা যায় সকল ইউনিয়নে চাউলের বস্তায় কম দিয়েছে।
নাম প্রকাশের অনিচ্ছুক সুবিধাভোগী বলেন,এই অফিসারের ( সানাউল্লাহ) আগে কিছুদিন সঠিক ওজনে চাউল দিয়েছে। যোগদানের পর থেকে কম দিয়ে যাচ্ছে । প্রতিবাদ করলে তাদের প্রতিনিধি ট্যাগ অফিসার বলে বেশি বুঝলে কার্ড বাতিল করে দেবে গোডাউন কর্মকর্তা।
নাম প্রকাশের অনিচ্ছুক চেয়ারম্যানগন বলেন,যে দিন ভিজিডি চাউল দেওয়া হয় ঐ দিন সকালে গোডাউন থেকে নসিমনে সরাসরি চাউল আসতে থাকে এবং সরকারের প্রতিনিধি ট্যাগ অফিসারের তত্তাবধনে কার্ডধারীদের দেওয়া হয়।বস্তা থেকে কিছু চাউল বের করে কম দেওয়ার সময় আমাদের নেই।যাদের দিয়ে দিনে দুপুরে রাস্তায় অথবা বোর্ড অফিসে চাউল বের করবো,জনগন তাদের গণপিটুনি দেবে।আরো প্রশ্নের জবাবে বলেন সরকারি লোকের সাথে কড়ায়গণ্ডায় হিসাব মতে চাউল বুঝে নিলে গরিবের ভাগ্যে সঠিক সময়ে চাউল জুটবেনা।আমাদের সহ ভোগান্তির শেষ থাকবে না।এজন্য চুপকরে থাকা ছাড়া উপায় নেই।

জানতে চাইলে উপজেলা খাদ্যগুদাম কর্মকর্তা সানাউল্লাহ বলেন,আমার গোডাউন থেকে চেয়ারম্যানদের চাউল বুঝে নিতে হবে।পরে চাল কম হলে আমার কিছু করার নেই এবং বাহিরে চলে গেলে কোন অভিযোগের দায়ভার আমি নিবো না।

এখন সাধারণ জনগনের প্রশ্ন এই চুরিকৃত চাউলের বিচার কি হবে ঐ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *