বানিজ্য ডেস্ক: পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার পরও জুলাইয়ে বিশ্ববাজারে রেকর্ড পরিমাণ খাদ্যশস্য রফতানি করেছে রাশিয়া। এদিকে জুলাই মাসে দেশটির পঞ্চম শীর্ষ গম ক্রেতা হিসেবে সেখান থেকে ২ লাখ ২০ হাজার টন গম আমদানি করেছে বাংলাদেশ।
রাশিয়ান গ্রেইন ইউনিয়নের (আরজিইউ) বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে রাশিয়ার রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত সংবাদমাধ্যম আরটি।
আরজিইউর তথ্য বলছে, জুলাই মাসে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ৫ দশমিক ৬৮ মিলিয়ন টন খাদ্যশস্য রফতানি করেছে রাশিয়া। এর মধ্যে রেকর্ড পরিমাণ ৪ দশমিক ৫৪ মিলিয়ন টন গম রফতানিও রয়েছে,। যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১ দশমিক ৬ গুণ বেশি।
দেশটির গমের সবচেয়ে বড় ক্রেতা হচ্ছে সৌদি আবর। গত মাসে সেখানে ৫ লাখ ৭৮ হাজার টন গম রফতানি করেছে রাশিয়া। এর পরে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে তুরস্ক, সেখানে রফতানি করা হয়েছে ৫ লাখ ১৮ হাজার টন গম। আর রাশিয়ার তৃতীয় শীর্ষ গম ক্রেতা হচ্ছে মিশর। আগের মাসে দেশটি রাশিয়া থেকে ৪ লাখ ৬৭ হাজার টন গম আমদানি করেছে। চতুর্থ স্থানে থাকা ইসরাইল আমদানি করেছে ৩ লাখ ৪৫ হাজার টন গম।
এদিকে বাংলাদেশও দেশটি থেকে গম আমদানি করে থাকে। জুলাই মাসের রাশিয়ার পঞ্চম শীর্ষ গম আমদানিকারক হিসেবে বাংলাদেশ ২ লাখ ২২ হাজার টন গম আমদানি করেছে। এর পরেই রয়েছে তানজানিয়া ও সুদান। দেশদুটি যথাক্রমে ৯৪ হাজার টন ও ৬৪ হাজার টন গম আমদানি করেছে রাশিয়া থেকে।
রাশিয়ার আরেকটি সংবাদমাধ্যম আরআইএ নভোস্তিকে আরজিইউর অ্যানালাইটিকস বিভাগের পরিচালক এলেনা টিউরিনা জানান, লাতিন আমেরিকার দেশগুলো রাশিয়ার গমের নতুন ক্রেতা হয়ে উঠেছে। যেমন, গত মাসে ব্রাজিলে ৬২ হাজার টন এবং পেরুতে ৪৯ হাজার টন গম রফতানি করেছে রাশিয়া। যেখানে গত বছরের জুলাইয়ে সেখানে গম রফতানিই করত না রাশিয়া।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সামগ্রিকভাবে জুলাই মাসে ৩৩টি দেশে গম রফতানি করেছে রাশিয়া। যেখানে ২০২২ সালের একই মাসে ২৬টি দেশে গম রফতানি করত দেশটি।
২০২২ সালেও কৃষি পণ্যের নিট রফতানিকারক হিসেবে নিজেদের মর্যাদা অক্ষুণ্ন রেখেছে দেশটি। বিশ্বের পঞ্চম শীর্ষ গম রফতানিকারক হচ্ছে রাশিয়া।
তা ছাড়া গত বছর দেশটিতে রেকর্ড পরিমাণ ফসল উৎপাদিত হয়েছে। এ সময়ে কৃষকরা ১৫০ মিলিয়ন টনেরও বেশি খাদ্যশস্য উৎপাদন করেছে, যার মধ্যে ১০০ মিলিয়ন টন গমও রয়েছে।
এদিকে গত ১৭ জুলাই ইউক্রেনের বন্দরগুলো থেকে নিরাপদে শস্য রফতানির চুক্তি থেকে মস্কো সরে এসেছে। এতে বিশ্বব্যাপী চড়া খাদ্যের দাম আরও বাড়তে পারে। কারণ, ইউক্রেন থেকে গম রফতানি বন্ধ হয়ে গেলে বিশ্ববাজারে গমের সরবরাহে ব্যাঘাত ঘটতে পারে। এই শঙ্কায় শস্যটির দাম ঊর্ধ্বমুখী।
ইউক্রেন-রাশিয়া সংঘাত শুরুর পর গত বছরের মাঝামাঝিতে তুরস্ক ও জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় ইউক্রেনের বন্দরগুলো দিয়ে নিরাপদে শস্য রফতানির কৃষ্ণ সাগর চুক্তি হয়। তিন দফায় বাড়ানোর পর ১৭ জুলাই এই চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়।
জাতিসংঘের তথ্যানুসারে, এ পর্যন্ত এই চুক্তির মাধ্যমে ইউক্রেনের বন্দরগুলো দিয়ে প্রায় ৩৩ মিলিয়ন মেট্রিক টন খাদ্য রফতানি করা গেছে।
অর্গানাইজেশন ফর ইকোনমিক কো-অপারেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট তথ্য বলছে, রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাত শুরুর আগে ইউক্রেন বিশ্বের ৫ম শীর্ষ গম রফতানিকারক ছিল। বিশ্বব্যাপী মোট গম রফতানির ১০ শতাংশই ছিল দেশটির দখলে।