অনলাইন ডেস্ক : জোড়াতালি দিয়েই তিন মাসের মধ্যে বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) প্রকল্প চালু করতে চায় কর্তৃপক্ষ। এখনও টঙ্গী এলাকায় বাকি রাস্তার কাজ, শেষ হয়নি বেশ কয়েকটি র্যাম্পের কাজও। এ ছাড়া বাস কেনার দরপত্র চূড়ান্ত না করেই সেপ্টেম্বরে বিআরটি প্রকল্প চালুর বিষয়ে আত্মবিশ্বাসী প্রকল্পের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শফিকুল ইসলাম।
এদিকে বছরের পর বছর খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলা এ প্রকল্প আংশিক চালু করলে হিতে বিপরীত হবে বলেই মনে করেন পরিবহন ও যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ সালেহ উদ্দিন আহমেদ। এ রুটে চলমান বাসমালিকদের সঙ্গে নতুন সংকট তৈরি করবে বলেও আশঙ্কা তার। সম্প্রতি সময় সংবাদের সরেজমিন প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
একই সময়ে শুরু হওয়া বাকি সব প্রকল্প আলো ছড়ালেও এখনও গলার কাঁটা হয়ে আছে বিআরটি। একটু একটু করে বিমানবন্দর, টঙ্গী ওভারপাস চালু হলেও এখনও বাকি অনেক কাজ।
গাজীপুর চৌরাস্তায় ওভারপাসগুলো এখনও চলাচলের জন্য প্রস্তুত নয়। অন্য পাশে জয়দেবপুর অংশের কাজও তেমন এগোয়নি। কয়েকটি স্টেশন বাদে খালি চোখে দেখলে বোঝা যায় অনেক স্টেশনের কাজ এখনও মাঝপথে। তবে এ অবস্থায়ই সেপ্টেম্বরের শেষে কিংবা অক্টোবরের শুরুতে আংশিক চালুর কথা ভাবছে প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা। বিআরটি প্রকল্পের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শফিকুল ইসলাম সময় সংবাদকে বলেন, ‘বিআরটি প্রকল্প মধ্য-সেপ্টেম্বর বা অক্টোবরের শুরুতে চালু করতে পারব।’
সে ক্ষেত্রে এখনও বড় বাধা টঙ্গী ব্রিজের একাংশ। শেষ হয়নি সড়কের কাজও। আর এখনও বাস কেনার দরপত্রও চূড়ান্ত হয়নি। তাই এ অবস্থায় দাঁড়িয়ে কীভাবে তিন মাসের মধ্যে প্রকল্প চালু করা সম্ভব–এমন প্রশ্ন থেকেই যায়।
পরিচালক শফিকুল ইসলাম বলেন, মূল চ্যালেঞ্জ হলো টঙ্গী ব্রিজের বাকি অংশের কাজ। চলতি মাসের ৩০ তারিখের মধ্যে সেখানে গার্ডার বসানো হয়ে যাবে। বাসের টেন্ডারের চাহিদাপত্রের কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে।
স্টেশনগুলোর কাজ শেষ না হওয়ায় এ অবস্থায় চালু করা সম্ভব কি না–এমন প্রশ্নে শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘এমআরটির মতো আংশিক চালু করব। প্রথমত, আমরা আইটিএস ব্যবহার করছি না। আমাদের শুধু প্ল্যটফর্ম হলেই হয়। এরই মধ্যে ৫টি স্টেশন পুরোপুরি তৈরি হয়ে যাবে।’
তবে বেসামাল এ প্রকল্প আংশিকভাবে চালু করা হলে তা প্রকল্পকে আরও প্রশ্নবিদ্ধ করবে বলে মনে করছেন পরিবহন ও যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ সালেহ উদ্দিন আহমেদ। তা ছাড়া এই রুটে চলমান বাসের সমন্বয় না করে চালু করলে তা নতুন সংকট তৈরি করবে বলেই শঙ্কা তার। সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আমাদের উদ্দেশ্য ছিল দ্রুততম সময়ে, স্বল্প খরচে ও মানুষের ভোগান্তিবিহীন এ যাতায়াতটাকে শেষ করা। আংশিক করলে কি এটায় আমি জিততে পারব। লোকদেখানো কাজ করাটা মনে হয় ঠিক হবে না। সবচেয়ে ভালো হবে দ্রুত কাজগুলো শেষ করা।’
প্রাথমিক অবস্থায় ১০০ বাস দিয়ে এ প্রকল্প চালুর পরিকল্পনা করছে বিআরটি কর্তৃপক্ষ।
প্রসঙ্গত, ২০১২ সালে শুরু হওয়া বিআরটি প্রকল্পের অধীন ২০১৬ সালে বিশেষ বাস চালুর কথা ছিল। প্রকল্পের পরিকল্পনা অনুযায়ী, ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে গাজীপুরের জয়দেবপুর পর্যন্ত জোড়া লাগানো আধুনিক বাস চলবে। এসব বাসের পথ হবে সড়কের মাঝখান দিয়ে। যানজট, সংকেত কিংবা অন্য কোনো কারণে কোথাও বাসের চলাচল বাধাগ্রস্ত হবে না। ঘণ্টায় ২০ হাজার যাত্রী যাতায়াত করতে পারবে। যার কাজ এখনও চলমান।
সূত্র: সময় টিভি