অনলাইন ডেস্ক : দেশের প্রথম এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ শনিবার বিকাল সাড়ে ৩টায় উদ্বোধন করেন তিনি।
শুরুতে সাধারণের চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হবে প্রায় ২০ কিলোমিটার পথের ১২ কিলোমিটার। উদ্বোধনের পর আগামীকাল রবিবার ভোর ৬টা থেকে মানুষ চলাচল করতে পারবে উড়াল সড়ক দিয়ে।
ঢাকার বুকে নতুন সড়ক। মাথার উপর দিয়ে উত্তর থেকে দক্ষিণে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর থেকে যাত্রাবাড়ীর কুতুবখালী পর্যন্ত রেললাইন ধরে যাচ্ছে এই পথ। এখন পুরোপুরি প্রস্তুত ফার্মগেইট পর্যন্ত ১২ কিলোমিটার।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিমানবন্দরের কাওলা থেকে ১০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে ফার্মগেট আসতে সময় লাগবে ১০ মিনিট। এক্সপ্রেসওয়েতে গাড়ির সর্বোচ্চ গতিসীমা থাকবে ঘণ্টায় ৬০ কিলোমিটার। সড়কটিতে পাড়ি দিতে সাধারণ যাত্রীদের আগে দেড় থেকে দুই ঘণ্টা সময় নষ্ট হতো। এখন থেকে সেটি আর হবে না।
জানা গেছে, উত্তরার কাওলা থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত ১৫টি সংযোগ সড়ক থাকলেও দুটির কাজ শেষ না হওয়ায় তেরটি সংযোগ সড়ক দিয়ে যান চলাচল করবে।
এক্সপ্রেসওয়ের ওপর দিয়ে থ্রি-হুইলার, মোটরসাইকেল বাইসাইকেল, পথচারীরা চলাচল করতে পারবে না। চার চাকা বা এর অধিক চাকার যান ছাড়া এ সড়কে অন্য কোনো যান চলাচল করতে পারবে না। কোথাও থেমে ছবিও তোলা যাবে না।
চার ক্যাটাগরিতে (শ্রেণি) টোল আদায় হবে এ উড়ালসড়ক থেকে। এর জন্য কয়েকটি ক্যাটাগরি করা হয়েছে। ক্যাটাগরি-১: কার, ট্যাক্সি, জিপ, স্পোর্টস ইউটিলিটি ভেহিক্যাল, মাইক্রোবাস (১৬ সিটের কম) ও হালকা ট্রাকের (৩ টনের কম) টোল ৮০ টাকা।
ক্যাটাগরি-২: মাঝারি ট্রাক (৬ চাকা পর্যন্ত) ৩২০ টাকা; ক্যাটাগরি-৩: ট্রাক (৬ চাকার বেশি) ৪০০ টাকা, ক্যাটাগরি-৪: সব ধরনের বাসের (১৬ সিট বা তার বেশি) টোল ১৬০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২০১১ সালের ১৯ জানুয়ারি চুক্তি সই হওয়া প্রকল্পের মেয়াদ ধরা হয়েছে ২০১১ সালের জুলাই থেকে ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত। পরবর্তীতে প্রকল্পের বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান ফার্স্ট ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে কোম্পানি লিমিটেডের সঙ্গে বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের ১৫ ডিসেম্বর ২০১৩ তারিখে সংশোধিত চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। প্রকল্পটি থাইল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ইটালিয়ান থাই ডেভেলপমেন্ট পাবলিক কোম্পানি লিমিটেড ৫১ শতাংশ ও চীনভিত্তিক প্রতিষ্ঠান শোনডং ইন্টারন্যাশনাল ইকোনোমিক গ্র্যান্ড টেকনিক্যাল কো-অপারেশন গ্রুপ ৩৪ শতাংশ ও সিনোহাইড্রো কর্পোরেশন লিমিটেড ১৫ শতাংশ যৌথ উদ্যোগে নির্মিত হচ্ছে। প্রকল্পের মূল দৈর্ঘ্য ১৯ দশমিক ৭৬ কিলোমিটার। র্যাম্পসহ মোট দৈর্ঘ্য ৪৬ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার।
প্রকল্পের মোট ব্যয় ৮৯৪০ কোটি টাকা যার ২৭ শতাংশ বাংলাদেশ সরকার ভিজিএফ হিসেবে বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানকে প্রদান করবে। তবে ভূমি অধিগ্রহণ, নকশা বদল, অর্থ সংস্থানের জটিলতায় চারবার সময় বৃদ্ধির ফলে ব্যয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৩ হাজার ৮৫৮ কোটি টাকায়।