হামিদুল আলম সখা
পাকিস্তান আমলে ময়মনসিংহ থেকে আমরা গ্রামের বাড়িতে বেড়াতে যেতাম।কখনো ঈদের ছুটি, কখনো গ্রিস্মকালিন ছুটি অথবা পূজার ছুটি।আমার বয়স তখন কতইবা হবে পাঁচ কিংবা ছয়। গ্রামের বাড়িতে দশটা ,এগারোটার দিকে দোকানি আসতো।বাহির বাড়িতে বসতো।দোকানির ভাড়ের ভিতরে বিভিন্ন কৌটা থাকতো। সেখানে কুকিজ বিস্কুট, চকলেট,তিলের খাজা ,মিষ্টি বিস্কুট ইত্যাদি থাকতো।
ছোট বাচ্চাদের মায়েরা তাদের গোলা থেকে কেউ ধান, কেউ পাট ,কেউবা সরিষা ইত্যাদি দিয়ে সদাই কিনে তাদের বাচ্চাদের দিতো।বাচ্চারা মহা আনন্দে সদাই খেয়ে যেতো।আমি ফেল ফেল করে তাকিয়ে থাকতাম।আমার মায়ের গোলা ছিল না।পণ্য দিয়ে পণ্য নিতে পারতো না। ঘরে গিয়ে আমার মা পয়সা এনে কুকিজ বিস্কুট কিনে দিতো।আমি মহা আনন্দে খেতাম।কুকিজ বিস্কুট দাঁতের নিচে পড়ে কড়মড় আওয়াজ করতো।আমার খুবই ভালো লাগতো।যারা কুকিজ বিস্কুট খেতে তারা একদিকে বসতো।মায়েরা বাচ্চাদের আনন্দ উপভোগ করতো।
আমি বড় হয়ে জেনে ছিলাম আমার মায়েরও এরকম ধান, পাটের গোলা থাকার কথা ছিল। কিন্তু মায়ের অধিকার কখনোই বুঝিয়ে দেয়া হয়নি।
সেই ছোটবেলার কথা আজ মনে পড়ে খুব।
সেই কুকিজ খাবার কথা এখনো মনে পড়ে।
সেই কড়মড় করে কুইজের শব্দ এখনো আমার কানে বাজে।