নিউজ ডেস্ক: কাগজ দিয়ে বিশেষ এক ধরনের পরিবেশবান্ধব ‘গ্রিন পেন’ উদ্ভাবন করা হয়েছে। পরিবেশ বান্ধব এ কলম লেখা শেষে মাটিতে পুঁতলেই হবে গাছ। এটি লেখার কাজ করার পাশাপাশি সবুজ বনায়নে কার্যকরী ভূমিকা পালন করবে বলে জানান ‘গ্রিন ইকো’র প্রতিষ্ঠাতা সঞ্জয় চৌধুরী।
সরেজমিন ঘুরে জানা যায়, বর্তমানে জীব-বৈচিত্র্য হুমকির মুখে। সে জায়গা থেকে পরিবেশের জন্য সবার কাজ করার জায়গা রয়েছে, সেখান থেকে ‘সবুজ অর্থনীতি বিনির্মাণের জন্য’ এ স্লোগান নিয়ে ‘গ্রিন ইকো’ নামে একটি সংগঠন তৈরি করেন রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী সঞ্জয় চৌধুরী।
তার বাড়ি কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার কালিগঞ্জ ইউনিয়নে। এ ‘গ্রিন ইকো’ সদস্যরা একটি কলম বাজারে নিয়ে আসে। যার নাম দেয় ‘গ্রিন পেন’, যে কলমটি পরিবেশ বান্ধব। সংগঠনটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, কলমটি জনসাধারণের ব্যবহারের মধ্য দিয়ে প্লাস্টিকের ব্যবহার কমানো যাবে। কেননা কলমটি কাগজের তৈরি।
এতে ব্যবহার শেষে কলমটি মাটির সংস্পর্শে আসলেই কলমের কাগজের অংশটি জৈব প্রক্রিয়ায় মাটির সাথে মিশে যাবে। এছাড়া মজার বিষয়টি হলো কলমটির পেছনের অংশে নানা ধরনের বৃক্ষের বীজ সংযুক্ত করা আছে; ব্যবহার শেষে মাটিতে বা টবে গেঁথে দিলেই কলমের কাগজের অংশটি মাটির সাথে মিশে যাবে এবং বীজটি থেকে তৈরি হবে গাছের চারা।
পরিবেশ বান্ধব কলমটির উদ্যোক্তা সঞ্জয় চৌধুরী বলেন, ‘গ্রিন পেন উৎপাদনের ক্ষেত্রে আমরা প্লাস্টিকের ব্যবহার অনেকে কমিয়েছি। এর উৎপাদনে আমরা ৯৫ শতাংশ প্লাস্টিকের ব্যবহার কমানো সম্ভব হয়েছে। অন্যদিকে কলম থেকে একটি গাছের চারা উৎপাদনের সুযোগ আছে।
তিনি বলেন, গ্রিন পেন উৎপাদনের ক্ষেত্রে কয়েকটি বিষয়কে মাথায় রেখে কাজ করেছি। যেহেতু এটি হাতে তৈরি করতে হয়, সেজন্য কুড়িগ্রামের মতো প্রান্তিক জেলার কর্মসংস্থানের বিষয়টি মাথায় নেয়া হয়েছে। যে সমস্ত মহিলারা বাইরের কঠিন শ্রমের কাজ করতে পারেন না অথচ সংসারে চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন তাদেরকে কলম তৈরি কাজে নেয়া হচ্ছে। তাদের সংসারের নিয়মিত কাজের পাশাপাশি একটি সহায়ক কর্মসংস্থানের চেষ্টা করছি।
দেশব্যাপী ছড়িয়ে দেয়ার পাশাপাশি বাইরেও রফতানি করতে চায় গ্রিন ইকো। সে ক্ষেত্রে সরকারি ও বেসরকারি ও ব্যক্তি পর্যায়ের বিভিন্ন দফতরের পৃষ্ঠপোষকতা চেয়েছে সংগঠনটি। এদিকে ব্যক্তি পর্যায়ে গ্রিন পেনের পাশে দাঁড়িয়েছেন অনেকে। এদের মধ্যে অনলাইন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান তটিনির পরিচালক জুঁই সরকার অন্যতম। তিনিও ‘গ্রিন ইকো’ এর সদস্য।
জুঁই সরকার সময় সংবাদকে বলেন, পরিবেশ বান্ধব পণ্য দেশব্যাপী ছড়িয়ে দেয়া উচিত। তটিনির নিজস্ব পণ্যের সাথে গ্রিন পেন উপহার দেয়া দিয়ে যাকে। সেই সাথে আমাদের প্রতিষ্ঠান থেকে গ্রিন পেনটি বিক্রির চেষ্টা করছি। বিভিন্ন সভা সেমিনার আয়োজনের মাধ্যমে মানুষকে পরিবেশ বান্ধব কলম ব্যবহারে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। প্রতি এক হাজার গ্রিন পেন বিক্রির অর্থ থেকে ১০টি গাছের রোপণ করা হচ্ছে।
সূত্র: সময় সংবাদ