নিজস্ব প্রতিবেদক:
বরগুনা জেলার আমতলী–তালতলী অঞ্চলের মানুষের ন্যায্য অধিকার আদায়ের দাবিতে আবারও সরব হয়েছেন স্থানীয়রা। বুধবার দুপুরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বরগুনা-৩ (আমতলী–তালতলী), আসন ১১২ পুনর্বহালের জোর দাবি জানিয়ে নির্বাচন কমিশনের প্রতি আহ্বান জানান। তাদের অভিযোগ, ২০০৮ সালের জাতীয় নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক সুবিধার্থে আওয়ামী লীগ সরকারের পরামর্শে নির্বাচন কমিশন অন্যায়ভাবে এ আসনটি বিলুপ্ত করে।
তালতলী উপজেলা যুবদলের যুগ্ন আহবায়ক, সালমান রুমি কামরুল বলেন, এ সিদ্ধান্ত ছিল জনগণের ভোটাধিকার সংকুচিত করার ষড়যন্ত্রের অংশ। এর ফলে প্রায় ৪ লক্ষাধিক ভোটার তাদের নিজস্ব আসন থেকে বঞ্চিত হন। আমতলী–তালতলী অঞ্চলের মানুষ কার্যত জাতীয় সংসদে নিজেদের প্রতিনিধিত্ব হারান। সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়, ভৌগোলিক বাস্তবতা, সাংস্কৃতিক ঐক্য ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক সম্পূর্ণ উপেক্ষা করে এ অন্যায় সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়া হয়েছিল।
তথ্য তুলে ধরে আরো বক্তারা জানান, বরগুনা জেলার মোট জনসংখ্যা প্রায় ১২ লক্ষাধিক। জনসংখ্যার অনুপাতে এখানে কমপক্ষে ৩টি সংসদীয় আসন থাকার সাংবিধানিক যৌক্তিকতা রয়েছে। শুধু আমতলী (প্রায় ২.৩৫ লক্ষ) ও তালতলী (প্রায় ১.৮৫ লক্ষ) উপজেলার জনসংখ্যা মিলেই দাঁড়ায় প্রায় ৪ লক্ষাধিক। ভৌগোলিকভাবে এ দুটি উপজেলা বরগুনার সবচেয়ে দূরবর্তী ও উপকূলীয় অঞ্চল। আলাদা আসন না থাকলে এখানকার মানুষের সমস্যা, উন্নয়ন ও বঞ্চনার কণ্ঠস্বর কখনোই জাতীয় সংসদে প্রতিফলিত হবে না।
বক্তারা স্পষ্ট ভাষায় ঘোষণা দেন বরগুনার ৩টি আসন অবিলম্বে পূর্বের মতো বহাল করতে হবে। বিশেষ করে বরগুনা-৩ (আমতলী–তালতলী), আসন ১১২ পুনর্বহাল করতে হবে।নির্বাচন কমিশনকে কোনো রাজনৈতিক দলের স্বার্থ নয়, জনগণের অধিকার ও সাংবিধানিক বাস্তবতার ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে তিন দফা দাবি উপস্থাপন করা হয় 1. জনগণের সংখ্যা, ভৌগোলিক বাস্তবতা ও ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটের ভিত্তিতে বরগুনার ৩টি আসন অবিলম্বে পুনর্বহাল করা।2. ২০০৮ সালের বিতর্কিত ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত সিদ্ধান্ত বাতিল করা।
3. গণতান্ত্রিক অধিকার ও ভোটাধিকারের সুরক্ষা নিশ্চিত করা।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেন, “আমতলী–তালতলীর মানুষ দীর্ঘদিন ধরে অন্যায়ভাবে বঞ্চিত হয়ে আসছে। একটি পূর্ণাঙ্গ আসনের মতো জনসংখ্যা থাকার পরও আমাদের অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে।”
আরও বলা হয়, “জনগণের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন ছাড়া এ অন্যায়ের প্রতিকার সম্ভব নয়। বরগুনার মানুষ আসন পুনর্বহালের ন্যায্য দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবে।”