বিশ্বের অস্ত্র তৈরির অর্থ শিশুদের উন্নয়নে ব্যয় করুন: প্রধানমন্ত্রী

নিউজ ডেস্ক: ইউক্রেন-রাশিয়া ও ইসরাইল-ফিলিস্তিনের যুদ্ধের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিশ্বের অস্ত্র বানানোর অর্থ শিশুদের উন্নয়নে ব্যয় করা হোক এটাই আমরা চাই। আমরা যুদ্ধ নয়, শান্তি চাই।

বার (১৮ অক্টোবর) রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ‘শেখ রাসেল দিবস-২০২৩’-এর উদ্বোধনী ও পদক প্রদান অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘১৯৭৫ সালে আমার পরিবারের সবাইকে হত্যার পর রিফিউজি হিসেবে আমি ও আমার বোনকে বিদেশে থাকতে হয়েছে। রিফিউজি হিসেবে থাকার কষ্ট আমরা বুঝি। নিজের নাম-পরিচয় দিতে পারব না, অন্যের দেশ, ভাষা আলাদা, সেখানে থাকতে হবে, নিজের দেশে কবে যাব সে নিশ্চয়তা নেই। সেভাবেই ছয়টি বছর কাটিয়ে এসেছি।’

বিশ্বে যখন কোনো যুদ্ধ হয়, তখন এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। যুদ্ধ শান্তি ও উন্নতি ধ্বংস করে দেয় বলে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা ধ্বংস চাই না। আমরা উন্নতি চাই, আমরা শান্তি চাই। আমরা শান্তির পক্ষে কাজ করি।’

আজকে ইসরাইলেও শিশু মারা যাচ্ছে, ফিলিস্তিনেও শিশু মারা যাচ্ছে। ফিলিস্তিনে তো হাসপাতালে বোমা মেরে শিশুদের হত্যা করা হয়েছে। এ সময় বিশ্ব নেতাদের প্রতি যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যুদ্ধ মানুষের মঙ্গল আনে না। যুদ্ধে সবচেয়ে বেশি কষ্ট পায় শিশু আর নারী। আর যুবকরা দেয় জীবন। সন্তানহারা পিতা-মাতা আর পিতা-মাতাহারা সন্তান, তাদের যে কী বেদনা সেটি আমরা জানি।’

এ সময় শিশুদের সুশিক্ষিত হওয়ার আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘একটা কথা মনে রাখবা, অর্থ-সম্পদ, টাকা-পয়সা কিছুই থাকে না। কিন্তু বিদ্যাটা থেকে যায়। আর এই বিদ্যাই হলো মূল শক্তি। তোমরা পিতা-মাতার কথা মেনে চলবে, সুশিক্ষায় শিক্ষিত হবে।’
 
এর আগে শেখ রাসেল দিবস উপলক্ষে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) মন্ত্রণালয়ের অধীনে বাস্তবায়নাধীন ১০টি প্রকল্প উদ্বোধন এবং ৭টি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী।
কিশোর-কিশোরীদের সাইবার অপরাধ রোধে ১৩২১৯ নম্বরের হেল্পলাইন সেবা, স্মার্ট ৩৩৩, স্মার্ট প্রেগনেন্সি মনিটরিং সিস্টেম এবং সমন্বিত ই-টোল কালেকশন সেবাসহ আরও মোট ১০টি ই-সেবা প্রকল্পের উদ্বোধন করেন সরকার প্রধান।
 
১৯৬৪ সালের আজকের এই দিনে (১৮ অক্টোবর) রাজধানীর ধানমন্ডির ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু ভবনে জন্মগ্রহণ করেন শেখ রাসেল। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ঘাতকদের নির্মম বুলেট থেকে রক্ষা পাননি শিশু শেখ রাসেল। বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে নরপিশাচরা নির্মমভাবে হত্যা করেছিল তাকেও।
 
শেখ রাসেলকে হত্যার আগে ঘাতকরা একে একে তার পরিবারের অন্য সদস্য – বড় ভাই শেখ কামাল, শেখ জামাল, মা ফজিলাতুন্নেসা মুজিব এবং বাবা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করে। ইউনিভার্সিটি ল্যাবরেটরি স্কুলের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র দুরন্তপ্রাণ শেখ রাসেল এমন সময়ে মৃত্যুকে আলিঙ্গন করেন, যখন তার পিতার রাজনৈতিক জীবনকে দেখতে শুরু করেছিলেন মাত্র।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের এক সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ২০২১ সাল থেকে শেখ রাসেলের এ জন্মদিন ‘শেখ রাসেল দিবস’ হিসেবে পালিত হচ্ছে। রাষ্ট্রীয়ভাবে তৃতীয়বারের মতো আজ ‘শেখ রাসেল দিবস’ পালনের প্রতিপাদ্য ‘শেখ রাসেল দীপ্তিময়, নির্ভীক নির্মল দুর্জয়’।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *