অর্থনীতি ডেস্ক: বৃহস্পতিবার (২৫ মে) অর্থনীতি সমিতির অডিটরিয়ামে সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. আইনুল ইসলামের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত ‘বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির বিকল্প বাজেট প্রস্তাবনা ২০২৩-২৪: বৈষম্য নিরসনে জনগণতান্ত্রিক বাজেট’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এই বিকল্প বাজেট উত্থাপন করেন সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. আবুল বারাকাত।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, উন্নয়ন এবং পরিচালন ব্যয় মিলে বিকল্প বাজেটের মোট আকার ২০ লাখ ৯৪ হাজার ১১২ কোটি টাকা। এটি চলতি অর্থবছরের বাজেটের ৩ গুণ।
ঘোষিত বিকল্প বাজেটকে সম্প্রসারণমূলক উল্লেখ করে আবুল বারাকাত বলেন, আমরা শুনেছি, সরকার আগামী অর্থবছরের জন্য যে বাজেট প্রণয়ন করেছে তার আকার ৭ লাখ ৬৪ হাজার কোটি টাকা। সে হিসেবে আমাদের বিকল্প বাজেট ২ দশমিক ৭ গুণ বড়।
ক্রমবর্ধমান মূল্যস্ফীতি, লাগামহীন কর্মবাজার সংকোচন, মহামারি ও ইউরোপ যুদ্ধের অভিঘাত, এসব বিষয় বিবেচনা করে আগামী বাজেট প্রণয়ন করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
সমিতির সভাপতি বলেন, বিকল্প বাজেটে ২৪টি মূল পয়েন্টের উপস্থাপন করা হয়েছে। এর মধ্যে, বৈষম্য ও অসম দারিদ্র্য নিরসন, সামাজিক সুরক্ষা ও নিরাপত্তা বেষ্টনী, মূল্যস্ফীতি, বিনিয়োগ ও সঞ্চয়, রেমিট্যান্স, পুঁজিবাজার, ব্যাংক, বৈদেশিক খাত, সরকারি ঋণ, কৃষি ভূমি, ভূমি মামলা, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, নারীর ক্ষমতায়, প্রতিবন্ধী মানুষ, প্রকৃতি ও সরকারি অর্থের সংস্থান প্রভৃতি বিষয় রয়েছে।
দেশে সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ বহুমাত্রিক দরিদ্র উল্লেখ করে তিনি বলেন, দেশে ধনী ও অতি ধনীর সংখ্যা ১ শতাংশ। এদিকে করোনাকালের চেয়েও বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে বহুমাত্রিক দরিদ্রের সংখ্যা। পাশাপাশি প্রতিনিয়তই বাড়ছে জিনিসপত্রের দাম।
অন্যদিকে প্রকৃত মজুরি না বাড়ায় জনজীবনে দুর্ভোগে নেমে আসার কথা জানিয়ে সমিতির সভাপতি বলেন, মানুষের সঞ্চয়ের ক্ষমতা কমে যাচ্ছে। ফলে মানুষ সঞ্চয় ভেঙে খাচ্ছে। আবার অনেকেই ধার দেনা করে জীবনযাপন করছে। ফলে তাদের খাদ্য তালিকা থেকে আমিষ জাতীয় খাবার বাদ দিতে বাধ্য হতে হচ্ছে।
কাজেই বিকল্প এই বাজেট প্রণয়ন করা হলে এসব সমস্যার সমাধান সম্ভব হবে বলে মনে করেন তিনি।
এছাড়াও এ অনুষ্ঠানে দেশের ৬৪টি জেলা, ১৩৫টি উপজেলা এবং ৪৫টি ইউনিয়ন থেকে বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সদস্য এবং বিভিন্ন শ্রেণিপেশার প্রতিনিধিরা ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন।
এর আগে ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের জন্য ২০ লাখ ৫০ হাজার ৩৬ কোটি টাকার বিকল্প বাজেট পেশ করেছিল এ সমিতি।