ব্রহ্মপুত্রের ভাঙনে বিলীনের পথে স্কুল

নিউজ ডেস্ক: পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ব্রহ্মপুত্রের ভাঙনে বিলীনের পথে কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার নয়ারহাট ইউনিয়নের দক্ষিণ খাউরিয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজের পাকা ভবন। এরই মধ্যে ভবনের একাংশ নদে বিলীন হয়ে গেছে।

রোববার (১৮ জুন) ভোরে ভবনের একাংশ ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙনে ধসে পড়ে। এ ভাঙন অব্যাহত থাকলে পুরো ভবনটি বিলীন হয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।


স্থানীয়রা জানান, দুই বছর ধরে ভাঙনের কবলে থাকা ভবনটি রক্ষায় পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলেও কোনো লাভ হয়নি।
বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতর চারতলাবিশিষ্ট ভবনটি নির্মাণ করে। প্রায় ৭৪ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত ভবনটি ২০২০ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হয়। ২০২২ সালে ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙনে বিদ্যালয়টির একাংশ বিলীন হয়। তখন পাকা ভবনটি রক্ষায় বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলা হয়। তবে ভাঙনের ভয়াবহতায় বিদ্যালয়টি ভাঙনকবলিত স্থান থেকে দূরবর্তী স্থানে সরিয়ে নেয় কর্তৃপক্ষ। চলতি বছরের শুরু থেকে সেখানে একাডেমিক কার্যক্রম চালু রয়েছে। ফলে পাকা ভবনটি পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে ছিল।

বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি মো. দেলোয়ার হোসেন জানান, ভাঙনের তীব্রতায় আগের স্থান থেকে সরিয়ে নতুন স্থানে বিদ্যালয়ের কার্যক্রম চলছে। পাকা ভবনটিতে কিছু আসবাব রাখা ছিল। গত বছর ভাঙনের পর নদী অনেকটা দূরে সরে যাওয়ায় ভবনটি হয়তো রক্ষা পাবে বলে মনে করা হয়েছিল। কিন্তু দুদিন ধরে পানি বাড়তে থাকায় আবারও ভাঙন শুরু হয়েছে। রোববার ভোরে ভবনটির একাংশ ধসে পড়ে। বাকিটাও হয়তো চলে যাবে।

কলেজের অধ্যক্ষ জহিরুল ইসলাম মন্ডল বলেন, ‘এই প্রতিষ্ঠানটি নয়ারহাট ইউনিয়নের একমাত্র মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানে পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থী রয়েছে। ভবনটি পাওয়ার পর আমরা অত্যন্ত আনন্দিত হয়েছিলাম। কিন্তু শেষ রক্ষা হলো না। এখন নতুন স্থানে শিক্ষা কার্যক্রম চললেও শ্রেণিকক্ষ সংকট রয়েছে। নতুন ভবন পেলে শিক্ষার্থীদের পাঠদানে সুবিধা হবে।’

নয়ারহাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আসাদুজ্জামান জানান, পাকা ভবনটি ব্রহ্মপুত্রের ভাঙনে ধসে পড়েছে। এর দরজা-জানালা ও অন্যান্য আসবাব নতুন স্থানে নেয়া হয়েছে। ভাঙনের কারণে নয়ারহাট বাজারেরও বিভিন্ন স্থাপনা সরিয়ে নেয়া হচ্ছে।
চিলমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘স্কুল অ্যান্ড কলেজটি রক্ষার জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডকে বিভিন্ন সময় জানানো হয়েছিল। ভবনটি বিলীন হলেও শিক্ষার্থীদের পড়ালেখা যেন ব্যাহত না হয়, সে জন্য আমরা পূর্বপ্রস্তুতি হিসেবে প্রায় দেড় কিলোমিটার দুরে স্কুল অ্যান্ড কলেজের কার্যক্রম শুরু করেছি।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *