মহানবীর প্রিয় খাবারে লুকিয়ে আছে ডেঙ্গু জয়ের উপায়

স্বাস্থ্য ডেস্ক: বর্তমানে বাংলাদেশে ডেঙ্গুজ্বর ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। এ জ্বরের নেই কোনো ভ্যাকসিন, নেই কোনো ওষুধ। তাই চিকিৎসকরা বলছেন, একমাত্র সঠিক পথ্যই পারে ডেঙ্গু রোগীর জীবন বাঁচাতে।

বিশেষজ্ঞরা ডেঙ্গু জ্বরে রোগীকে প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধ ছাড়া অন্য কোনো প্রকার ওষুধ সেবন করা থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দিচ্ছেন।  স্বাভাবিক সব খাবারের সঙ্গে খেতে বলছেন পর্যাপ্ত তরল খাবার। কিন্তু আপনি কি জানেন, এই স্বাভাবিক খাবার ডেঙ্গু রোগীর জন্য সঠিকভাবে নির্বাচন করা না হলে ডেঙ্গু রোগীর জীবন প্রদীপ নিভে যেতে পারে?

 

ডেঙ্গু জ্বরে রোগীর শারীরিক অবস্থার মারাত্মক অবনতি হতে শুরু করে। এই সময় রোগীর উচ্চ তাপমাত্রায় জ্বর থাকে। সঙ্গে থাকে ভয়ঙ্কর মাথা ও শরীর ব্যথার যন্ত্রণা।
 
 ডেঙ্গু শক সিনড্রোমে রোগী ডেঙ্গু জ্বরে এতটাই দুর্বল হয়ে পড়ে যে, রোগী প্রায়ই অজ্ঞান হয়ে যায়। মাথা তুলে দাঁড়াতে পারে না। বমি কিংবা বমিভাব থাকার পাশাপাশি রোগীর ডায়রিয়া হতে শুরু করে এবং রক্তচাপ নিচের দিকে নামতে শুরু করে।
 
তাই কঠিন এই সময়ে জীবন যুদ্ধে লড়াই করে টিকে থাকতে হলে রোগীকে ক্যালরি ও পুষ্টিসমৃদ্ধ খাবার খেতে দিতে হবে। এ সময় রোগীর পেটের অবস্থা ভালো না থাকায় রোগীকে নরম পথ্য যা সহজে হজম হয় এমন খাবার নির্বাচন করার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা।
 
এসব বিষয় মাথায় রেখেই তাই রোগীর সঠিক পথ্য নির্বাচন করুন। আর এর জন্য ভরসা রাখতে পারেন মহানবীর প্রিয় খাবারে। ব্যক্তিগত জীবনে মহানবী নিজেকে সুস্থ, সবল ও ফিট রাখতে বেশ কিছু খাবারকে গুরুত্ব দিয়েছেন যা আমরা হাদিস থেকে জানতে পারি।
 
হযরত মোহাম্মদ ( সা.)  কখনও এমন খাবারকে প্রাধান্য দিতেন না যা শরীরের জন্য কষ্টকর বা নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। তার পছন্দের খাবারের তালিকায় তাই পুষ্টিগুণে অতুলনীয় খাবারকেই তিনি প্রাধান্য দিতেন।
 
বিশ্বনবীর প্রথম পছন্দনীয় খাবারের মধ্যে রয়েছে খেজুর। নানা পুষ্টিগুণে ভরপুর এই খাবারের পরই তিনি পছন্দ করতেন দুধ। ডেঙ্গু রোগীর পথ্যে এ দুটি খাবার অন্তর্ভুক্ত করলে রোগী সহজেই ক্যালরি ও পুষ্টিসমৃদ্ধ খাবার পাওয়ার সুযোগ পায় বলে মনে করছেন চিকিৎসকরা।
 
বিশ্বনবীর পছন্দের খাবারের মধ্যে রয়েছে মধু ও কালোজিরা। এই দুটি খাবার মানুষের জন্য বিশেষ উপকারী হওয়ায় তিনি আমাদের বলেছেন, মৃত্যু ছাড়া সব রোগের শ্রেষ্ঠ ওষুধ এটি। তাই ডেঙ্গু রোগীর খাবারে মধু এবং ভাতের সঙ্গে কালোজিরা ভর্তা রাখুন।
 
নবীর পছন্দের খাবারের মধ্যে আরও একটি খাবার হলো বার্লি। ডেঙ্গু রোগীর পেটে পীড়া কিংবা হজমে সমস্যা হলে ডেঙ্গু রোগীর পথ্যে বার্লিকে প্রাধান্য দিতে পারেন।
 
ডেঙ্গু রোগীর মস্তিষ্কে প্রদাহ সমস্যা বেশি থাকে। যে কারণে প্রচণ্ড মাথা ব্যথায় রোগী যন্ত্রণা পান, দুর্বল হয়ে পড়েন। মস্তিষ্কের এ প্রদাহ কমাতে রোগীকে তাই এসময় খেতে দিন সবুজ সবজি ও লাউ। এ দুটি খাবারের বিশেষ উপাদান মস্তিষ্কের জন্য বিশেষ উপকারী। তাই মহানবী এ খাবার ভীষণ পছন্দ করতেন।
ডেঙ্গু জ্বরের সময় প্লাটিলেটের সংখ্যা ও হিমোগ্লোবিন কমে যায়। হিমোগ্লোবিনের মাত্রা ঠিক রাখতে এবং প্লাটিলেট তৈরি করতে শরীরের প্রচুর আয়রনের প্রয়োজন। এর জন্যও সবুজ সবজি ও পাতার ওপর গুরুত্ব দিন। রোগীকে সবুজ সবজি হিসেবে খেতে দিতে পারেন পেঁপে, করলা। আর সবুজ পাতা হিসেবে খেতে দিতে পারেন পেঁপে-তুলসী-পুদিনা পাতার রস।
 
এসব খাবার ছাড়াও অ্যান্টি অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার যেমন ডাব, বেদানা, কিশমিশ, আঙুর, মাশরুম, পনির, মাখন, ঘি, ডিমও ছিল নবীর প্রিয় খাবারের তালিকায়। তাই রোগীর পথ্যে এসব খাবার রাখুন। রোগীর মৃত্যুর শঙ্কা এড়াতে এবং ডেঙ্গুকে জয় করতে এসব খাবারের বিকল্প নেই বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *