ইমাম ও মুফতি মোস্তফা আল – হুসাইনী
ইতিকাফের গুরত্ব ও ফযিলত।
==================
ইতিকাফ কাকে বলে?
ইতিকাফের আভিধানিক অর্থ হলো অবস্থান করা।
ইসলামি পরিভাষায় ইতিকাফ হলো
ইবাদতের উদ্দেশ্য ইতিকাফের নিয়তে নিজেকে নির্দিষ্ট জায়গায় নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত আবদ্ধ করে রাখা।
ইতিকাফ কত প্রকারও কি কি?
==================
ইতিকাফ তিন প্রকার :
১/সুন্নত ইতিকাফ।
২/নফল ইতিকাফ।
৩/ওয়াজিব ইতিকাফ।
(কানযুদ্দাকায়িক)
১ নাম্বার সুন্নত ইতিকাফ আর তা হলো রমযানের শেষ দশকে ২১ তারীখ রাতে বা ২০ রমযানের সূর্যাস্ত হওয়ার আগ থেকে ঈদুল ফিতরের চাঁদ দেখা পর্যন্ত ইতিকাফ করা।
নবী করীম সাঃ প্রতি বছর ঐ দিন গুলোতে ইতিকাফ করতেন
এজন্য একে সুন্নত ইতিকাফ বলে।
যেমন বুখারীর হাদিস শরীফে এসেছে
عن عبد الله بن عمر رضى الله عنهما قال كان رسول الله صلى الله عليه وسلم ىيعتكف ا لعشر الاواخر من رمضان حتى توفاه الله.
তা ছাড়া ও আবুদাউদ শরীফের সূত্রে বর্ণীত রয়েছে নবী করীম সাঃ রমযানের শেষ ১০ দিন ইতিকাফ করতেন কিন্তু এক বছর ইতিকাফ করতে পারেননি তাই পরবর্তী বছর ২০ রাত- দিন ইতিকাফ করেছেন.
২ নাম্বার নফল ইতিকাফ হলো
বছরের যে কোন সময় যতক্ষণ ইচ্ছে হয় ইতিকাফের নিয়তে মসজিদে অবস্থান করা।
৩ নাম্বার ওয়াজিব ইতিকাফ হলো_
মান্নত করা ইতিকাফ।
ইতিকাফের স্থান
ছাওয়াবের দিক দিয়ে ইতিকাফের জন্য সব চেয়ে উত্তম জায়গা হল মসজিদে হারাম তারপর মসজিদে নববী তারপর মসজিদে আকসা তারপরে যে কোন জামে মসজিদ ও পাঞ্জেগানা মসজিদ।
প্রকাশ থাকে যে মহিলাদের জন্য
ইতিকাফের জায়গা হল ঘরের নির্দিষ্ট কোন স্থান।
ইতিকাফের বিশেষ লাভ হল
ইতিকাফকারী অত্যন্ত পবিত্র ও গোনাহমুক্ত পরিবেশে থাকে।
ইসলামি শরীয়তে ইতিকাফের অবস্থানটাই এক ইবাদত হিসেবে গণ্য হয়।এবং ইতিকাফের মাধ্যমে রোযার হক আদায় করার সুযোগ হয়।
সব চেয়ে বড় কথা হল ইতিকাফের মাধ্যমে লাইলাতুল কদর লাভ করার সম্ভাবনা অনেক বেশী থাকে।
ইতিকাফের ফযিলতঃ
ইতিকাফের ফযিলত সম্পর্কে রাসুল সাঃ বলেছেন ইতিকাফ গোনাহ থেকে বিরত রাখে ও বাহিরের নেক্কার লোকজনের সকল নেকী ইতিকাফকারীর আমল নামায় লেখা হয়।
যেমন ইবনে মাজা শরীফে এসেছে
عن عبد الله بن عباس رضى الله عنه ان رسو الله صلى الله عليه وسلم قال فى المعتكف هو يعكف الذنوب و يجرى له من الحسنات كعامل الحسنات كلها.
তা ছাড়াও হাদিস শরীফে এসেছে যে ব্যক্তি রমযান মাসে ১০ দিন ইতিকাফ করবে তার আমল নামায় ২টি হজ্জ ও ২টি ওমরাহ এর ছাওয়াব লেখা হবে।
সুবহানাল্লাহ।
আল্লাহ পাক আমাদের সবাইকে ইতিকাফের আমলে যুক্ত হয়ে
ছাওয়াব হাসিল করার তাওফিক দান করুন।
বিশেষ দ্রষ্টব্য :
পুরো মহল্লায় কোন একজন ও যদি ইতিকাফ না করে তাহলে পুরো মহল্লাবাসী গুনাগার হবে।
আর কোন একজনও যদি ইতিকাফ আদায় করে দেয় তাহলে পুরো মহল্লা বাসীর পক্ষ থেকে জিম্মাদারী আদায় হয়ে যাবে।
বিশেষ করে আমার পাঠক দেরকে বলবো পুরো শেষ দশকে ইতিকাফ করতে না পারলেও।
বেজুর রাত্রি গুলো (২১,২৩,২৫,২৭ও২৯)এবাদতের ভেতরে কাটানোর চেষ্টা করব। ইনশাআল্লাহ।
সংকলক :
হাফেজ মাওলানা মুফতি মোস্তফা আল-হুসাইনী।
মুহতামিম:
বায়তুস সালাম বালিকা মাদ্রাসা।
ইমাম ও খতিব- মান্ডা, সরদার বাড়ি জামে মসজিদ, মুগদা, ঢাকা-১২১৪।