রাতে ভূমিকম্পে কাঁপলো ভারত-পাকিস্তান-আফগানিস্তান

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:আফগানিস্তানের হিন্দুকুশ অঞ্চল থেকে উৎপত্তি হওয়া ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল ভারতের রাজধানী দিল্লি ও পার্শ্ববর্তী এলাকাসহ উত্তর ভারত। তবে, আগের ঘটনার মতো কোনও ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। এর প্রভাবে জম্মু-কাশ্মীর ও পাকিস্তানেও কম্পন অনুভূত হয়।

৫.৮ মাত্রার ভূমিকম্পটির কেন্দ্রস্থল ছিল উত্তর-পূর্ব আফগানিস্তানের জুর্ম এলাকা। একই জায়গায় গত ২১ মার্চ ৬.৬ মাত্রার ভূমিকম্পের উৎপত্তি হয়েছিল। যার ফলে উত্তর ভারতের বেশিরভাগ অংশে বেশ শক্তিশালীভাবে কম্পন অনুভূত হয়েছিল।


ভারতের ভূকম্পণ পর্যবেক্ষণ ও গবেষণা সংস্থা ন্যাশনাল সিসমোলজি সেন্টার জানায়, শনিবার বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে ১০টার দিকে এই ভূমিকম্প হয়। এতে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন বাসিন্দারা। দিল্লিতে বহুতল ভবন থেকে তড়িঘড়ি বাইরে বেরিয়ে আসেন সবাই। রাস্তায় লোকজনের ভিড় জমে যায়।
ন্যাশনাল সেন্টার  ফর সেসিমোলজির বরাত দিয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এই সময় ও হিন্দুস্তান টাইমস বলছে, ঠিক আগের বারের মতো শনিবারের ভূমিকম্পটিও গভীরে উৎপন্ন হয়েছিল। ভূপৃষ্ঠ থেকে ১২৯ কিলোমিটার গভীরে এই ভূমিকম্প হয়। তবে এখন পর্যন্ত কোনো দেশেই হতাহতের কোনো সংবাদ পাওয়া যায়নি।
উল্লেখ্য, চলতি বছর এই নিয়ে তিন তিনবার জোরাল ভূমিকম্পের সাক্ষী থাকল ভারতের রাজধানী শহর। উত্তর ভারত মিলিয়ে একাধিক ছোট বড় কম্পন হয়েছে চলতি বছরে। এরমধ্যে হিমাচল প্রদেশ, উত্তরাখণ্ড, কাশ্মীর, পঞ্জাব, রাজস্থান, হরিয়ানা অন্যতম।

পাকিস্তানের ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণ ও গবেষণা সংস্থা ন্যাশনাল সিসমিক মনিটরিং সেন্টার জানিয়েছে, হিন্দুকুশ পর্বতমালার আফগানিস্তান ও তাজিকিস্তান সীমান্ত অঞ্চলে ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল। এর ফলে পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদ, লাহোর, রাওয়ালপিন্ডি, পেশোয়ার এবং আফগানিস্তানের সীমান্তবর্তী খাইবার পাখতুনখোয়ার বেশ কিছু জেলায় কম্পন অনুভূত হয়েছে।

এদিকে এক প্রতিবেদনে জম্মু ও কাশ্মীর সম্পর্কে হিন্দুস্তান টাইমস বলছে, জুন মাসে মোট ছোট বড় মিলিয়ে ১২ টি কম্পন দেখা গেছে জম্মু ও কাশ্মীরে। এর আগে ১০ জুলাই জম্মু ও কাশ্মীরের ডোডা জেলায় ৪.৯ রিখটার স্কেলের কম্পনের মাত্রা নিয়ে ভূমিকম্প অনুভূত হয়। গত ১৩ জুন জম্মু ও কাশ্মীরের ডোডা জেলায় কম্পনের মাত্রা ছিল রিখটার স্কেলে ৫.৪। যার কারণে বহু বাড়িতে সেখানে ফাটল দেখা গিয়েছিল।

দক্ষিণ ও দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার ভূপৃষ্ঠ মুলত ইন্ডিয়ান ও ইউরেশিয়ান— দুই ধরনের টেকটোনিক প্লেটের ওপর দাঁড়িয়ে রয়েছে। ভূতত্ত্ববিদদের মতে, গত কয়েক বছর ধরেই একটি বড় ইন্ডিয়ান প্লেট ক্রমশ উত্তর দিকে ইউরেশিয়ান প্লেটের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। এ কারণে দক্ষিণ এশিয়ার বিশাল অংশ ভূমিকম্পের ঝুঁকিতে রয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *