নিউজ ডেস্ক: ভিত্তি প্রস্তর স্থাপনের ৬ বছর পরও শুরু হয়নি লক্ষ্মীপুরের মজু চৌধুরীর হাট নৌবন্দরের নির্মাণ কাজ। ভূমি জরিপ ও অধিগ্রহণের জন্য সার্ভেয়ার নিয়োগ করা হলেও এখনো সে কাজ শুরু হয়নি। অভিযোগ রয়েছে, লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসন ও চাঁদপুর বিআইডব্লিউটিএর যৌথ সার্ভে কমিটির সমন্বয়হীনতার অভাবেই এমন সংকট সৃষ্টি হয়েছে। এতে হতাশ স্থানীয়রা।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ২০১৭ সালে ১২ জানুয়ারি রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষকে লক্ষ্মীপুরের মজু চৌধুরী হাট নৌবন্দরের সংরক্ষক হিসেবে নিযুক্ত করে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়। একই সালের ১৪ মার্চ মজু চৌধুরীর হাটকে নৌবন্দর ঘোষণা করে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কিন্তু ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের ৬ বছর পরও এখনো কাজের নেই দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি।
নৌবন্দর বাস্তবায়ন কমিটির আহ্বায়ক জাকির হোসেন ভূঁইয়া আজাদ বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকার প্রকল্পের মধ্যে লক্ষ্মীপুর মজু চৌধুরীর হাট নৌবন্দর প্রকল্প অন্যতম। দীর্ঘ ৬ বছরেও এ নৌবন্দরের দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি না হওয়ায় লক্ষ্মীপুরের মানুষ হতাশ।’
তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর সব উন্নয়ন দৃশ্যমান, কিন্তু লক্ষ্মীপুরের নৌবন্দর আর দৃশ্যমান হলো না। কেন ও কাদের কারণে এ বন্দরের কার্যক্রম স্থবির, তা খতিয়ে দেখার জন্য প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ টিমের প্রতি অনুরোধ জানাই।’
স্থানীয়রা জানান, লক্ষ্মীপুরের মজু চৌধুরীর হাট এলাকায় নৌবন্দর কার্যক্রম শুরু হলে ভোলা-বরিশাল, বরগুনা ও পটুয়াখালীর সঙ্গে লক্ষ্মীপুর হয়ে চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের সঙ্গে সহজ যোগাযোগের মাধ্যমে সৃষ্টি হতো। বন্দরকেন্দ্রিক লক্ষ্মীপুরে ব্যবসা বাণিজ্যের প্রসার ঘটতো। সৃষ্টি হতো নতুন নতুন কর্ম সংস্থানের। অথচ প্রধানমন্ত্রীর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের ৬ বছর পেরিয়ে গেলেও লক্ষ্মীপুরে নৌবন্দরের কার্যক্রম শুরু না হওয়ায় এখন হতাশ তারা। এ অবস্থায় দ্রুত নৌবন্দরের নির্মাণ কার্যক্রম শুরুর দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
এদিকে লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসক আনোয়ার হোছাইন আকন্দ বলেন, ‘নৌবন্দর বাস্তবায়নের বিষয়ে সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে অবহিত করা হয়েছে। বিষয়টি সরকারের বিবেচনায় রয়েছে। পর্যায়ক্রমে সরকার এটি বাস্তবায়ন করবে।’
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও লক্ষ্মীপুর-০২ (রায়পুর ও সদর আংশিক) আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট নুরউদ্দিন চৌধুরী নয়ন বলেন, ‘নৌবন্দরের কার্যক্রম উপলক্ষে এরইমধ্যে মজু চৌধুরীর হাট এলাকায় নৌপুলিশ ও কোস্টগার্ডের জন্য ৩৬ কোটি টাকা ব্যয়ে দুটি স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে। নাব্য সংকট দূর করতে নদী খনন কার্যক্রম চলমান রয়েছে। কিছু দিনের মধ্যে লক্ষ্মীপুরের সঙ্গে ঢাকার লঞ্চ চলাচল শুরু হলে মানুষের যাতায়াত সহজ হবে। পর্যায়ক্রমে এ নৌবন্দরের কার্যক্রম বাস্তবায়ন করবে সরকার।’
প্রধানমন্ত্রীর ঘোষিত এ নৌবন্দর বাস্তবায়িত হলে লক্ষ্মীপুরে নদীকেন্দ্রিক অর্থনৈতিক গতিশীলতা বাড়বে। সৃষ্টি হবে নতুন নতুন কর্মসংস্থানের। এতে বেকার সমস্যা লাঘবের পাশাপাশি ব্যবসা-বাণিজ্যে সমৃদ্ধ হবে লক্ষ্মীপুর, এমনটাই মনে করছে সচেতন নাগরিক সমাজ।
সূত্র : সময় সংবাদ