আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ফ্রান্সের প্যারিসে পুলিশের গুলিতে কিশোর নিহতের ঘটনায় বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠেছে ফ্রান্স। প্যারিসসহ বিভিন্ন শহরে সহিংসতা চালিয়েছে বিক্ষোভকারীরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ক্ল্যামার্ট শহরে কারফিউ জারি করা হয়েছে।
ক্লামার্ট শহরের স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার থেকে ৩ জুলাই প্রতিদিন রাত নয়টা থেকে সকাল ছয়টা পর্যন্ত কারফিউ বলবৎ থাকবে।
বৃহস্পতিবার (২৯জুন) নানতিয়েখ শহরের রাস্তায় বেশ কয়েকটি গাড়িতে আগুন জ্বালিয়ে দেয় বিক্ষোভকারীরা। পুলিশকে লক্ষ্য করে বিস্ফোরক দ্রব্য ও ঢিল ছোড়া হয়। একপর্যায়ে তাদেরকে ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাস ও রাবার বুলেট ছোড়ে পুলিশ। এতে দুপক্ষের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ায় রণক্ষেত্রে পরিণত হয় পুরো এলাকা।
পুলিশ-বিক্ষোভকারীদের মধ্যে চলমান এই সংঘর্ষের জেরে আতঙ্কের জনপদে পরিণত হয়েছে নানতিয়েখ শহর। নির্দিষ্ট সময়ের আগেই দোকানপাট বন্ধ করে দেয়া হচ্ছে। শহরের বিভিন্ন স্থানে দেখা মিলছে বিক্ষোভ চলাকালে আগুনে পুড়ে যাওয়া যানবাহনের ধ্বংসাবশেষ। রাজধানী প্যারিসের বাংলাদেশি অধ্যুষিত এলাকাগুলোতেও শত শত গাড়ি পুড়িয়ে দেন বিক্ষোভকারীরা। এই ঘটনায় চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে স্থানীয় বাংলাদেশি কমিউনিটিতেও।
তবে কেবল সহিংস বিক্ষোভ নয়, নিহত কিশোরের মায়ের নেতৃত্বে নানতিয়েখ শহরে শান্তি মিছিল করেন ৬ হাজারের বেশি স্থানীয় বাসিন্দা। সেখান থেকেও দ্রুত সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে এই হত্যার বিচার দাবি করা হয়।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে শহরের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে । বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়কের মোড় ও স্থাপনার সামনে পুলিশ টহল দিচ্ছে । প্যারিস ও আশপাশের এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর প্রায় ৪০ হাজার অতিরিক্ত সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জেরাল্ড দারমানিন। বিভিন্ন শহরে রাত দশটার পর গণপরিবহন বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্রে জানা গেছে, এখন পর্যন্ত প্রায় ৩২৮ বিক্ষোভকারীকে আটক করা হয়েছে। এছাড়া চলমান সংঘর্ষে নিরাপত্তা বাহিনীর বহু সদস্য আহত হয়েছেন।