মেঘনা-তেঁতুলিয়ায় ইলিশের আকাল, হতাশায় জেলে

নিউজ ডেস্ক: মৌসুমের প্রায় ২ মাস কেটে গেলেও কাঙ্ক্ষিত ইলিশের দেখা নেই ভোলার মেঘনা তেঁতুলিয়া নদীতে। এতে উপার্জন কমে গেছে জেলে ও ব্যবসায়ীদের। নিষেধাজ্ঞার পর এমন ইলিশ খরায় ধার দেনা নিয়ে চিন্তিত জেলেরা। তবে কিছুটা বিলম্বে হলেও মৌসুমের বাকি সময়ে পর্যাপ্ত ইলিশ পাওয়ার বিষয়ে আশাবাদী মৎস্য বিভাগ। এতে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন হয়ে ক্ষতিও পুষিয়ে নিতে পারবে জেলেরা।

জেলেরা জানায়, জ্যৈষ্ঠ মাস থেকেই মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীর নোনা পানি কমে মিঠাপানি বাড়তে থাকে। জোয়ারে স্রোত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বৃষ্টির পানিতে টই টুম্বুর হয়ে উঠেছে নদীগুলোতে। এ সময় সাগর থকে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ উঠে আসে মেঘনা-তেঁতুলিয়ায়।


চলতি মৌসুমে ইলিশ পাওয়ার জন্য পর্যাপ্ত বর্ষা, নদীতে পানি স্রোতসহ সব লক্ষণ থাকলেও কাঙ্ক্ষিত ইলিশ পাচ্ছে না জেলেরা। তারপরও প্রতিদিন আশায় বুক বেঁধে নদীতে ছুটছে হাজার হাজার নৌকা-ট্রলার। এ জেলেদের অধিকাংশই ফিরে আসে সামান্য মাছ আর হতাশা নিয়ে। এতে ট্রলারের তেল খরচ উঠলেও চিরচেনা অভাব-অনটনে থাকা জেলে পরিবারে সচ্ছলতা ফিরে আসছে না। বরং বাড়ছে মহাজনের দাদনের বোঝা। তাই ইলিশ নির্ভর বিশাল এ জনগোষ্ঠীর জীবন জীবিকার সংকট দূর হচ্ছে না।

দৌলতখান ভবানীপুর ঘাটের জেলে রফিজ হক জানান, শনিবার ৩ হাজার টাকার জ্বালানি ও খাবার বাকি নিয়ে মেঘনায় জাল ফেলতে যান। ট্রলারে মাঝিমাল্লা ছিলেন ৭ জন। ছোট বড় ৯টা ইলিশ পেয়েছেন। যা বিক্রি হয়েছে চার হাজার ৬০০ টাকা। দোকানের দেনা পরিশোধ করে তারা জন প্রতি ২৩০ টাকা করে ভাগে পেয়েছেন।

একই ঘাটের আবদুর রব মাঝি জানান, চার হাজার টাকা খরচ করে নদীতে গিয়ে মাছ পেয়েছেন ২ হাজার ৮০০ টাকার। এমন অবস্থায় মেঘনা পাড়ের অধিকাংশ জেলের। এতে তাদের দেনার পাল্লা ভারি হচ্ছে।

দৌলতখান আড়ত মালিক মিজানুর রহমান জানান, শুধু জেলেরা নয়, লোকসানের মুখে পড়েছেন ব্যবসায়ীরাও। ট্রলার প্রতি ২ থেকে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত দাদন দেয়া আছে। মাছ না পাওয়ায় দাদনের টাকা উঠানোর পরিবর্তে নতুন করে আরও দাদন দিতে হচ্ছে।

পুরনো দাদন ফেরতের পরিবর্তে নতুন করে পুঁজি হারানোর শঙ্কার কথা জানান ভবানীপুর ঘাটের আড়ত মালিক সফিজল হক।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোল্লা এমদাদুল্যাহ জানান, এখন ডিমওয়ালা ইলিশ কম পাওয়া যাচ্ছে। ইলিশের ডিম ছাড়ার সময় হলে নদীতে আসবে। তখন জেলেরা ইলিশ পাবে। এবং লক্ষ্যমাত্রাও অর্জিত হবে।

গত বছর মেঘনা-তেঁতুলিয়া নদীতে ১ লাখ ৭৮ হাজার মেট্রিক টন ইলিশ ধরা পড়েছে। তবে চলতি মৌসুমে ১ লাখ ৯২ হাজার মেট্রিক টন ইলিশের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে মৎস্য বিভাগ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *