নিউজ ডেস্ক: আগামী নির্বাচনে বিএনপি যদি অংশগ্রহণ না করেন, তাহলে বহু উকিল আব্দুস সাত্তার দলটি থেকে বেরিয়ে আসবে বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
সোমবার (৩১ জুলাই) দুপুরে সচিবালয়ে নিজ দফতরে ইলেকশন মনিটরিং ফোরামের (ইএমএফ) আমন্ত্রণে সফররত বিদেশি পর্যবেক্ষক প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক করে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করলেও তাদের কিছু সদস্য অংশ নিতে পারে বলে পর্যবেক্ষকরা বলেছেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, বিএনপির সব নেতারাই নির্বাচন করতে চান। অথচ দলটি তাদের সদস্যদের ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বর পদেও নির্বাচন করতে দিচ্ছে না। সিটি কর্পোরেশনের কাউন্সিলর নির্বাচনও করতে দিচ্ছে না।
আওয়ামী লীগের এই যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, মানুষ যদি দলটিতে থেকে নির্বাচনই করতে না পারেন…তাদের সবাই নির্বাচন করতে চায়। সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনগুলোতে যার বহিঃপ্রকাশ দেখেছি। আমরা উকিল আব্দুস সাত্তারকে দেখেছি। এ রকম বহু উকিল আব্দুস সাত্তার আগামী নির্বাচনে বেরিয়ে আসবে।
২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসন থেকে বিএনপির টিকিটে এমপি নির্বাচিত হন উকিল আব্দুস সাত্তার। দলীয় সিদ্ধান্তে গত বছরের ১১ ডিসেম্বর তিনি জাতীয় সংসদ থেকে পদত্যাগ করেন। ২৯ ডিসেম্বর তিনি দলে গুরুত্ব না পাওয়ার অভিযোগ এনে অভিমানে বিএনপি থেকে পদত্যাগ করেন। গত ১ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত উপ-নির্বাচনে জিতে ষষ্ঠবার সংসদে যান উকিল সাত্তার।
এরআগে পর্যবেক্ষক টেলি এল. ইসলে বলেন, আমরা লক্ষ্য করেছি, বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলে গাইবান্ধায় একটি ঘটনায় নির্বাচন বাতিল করে দিয়েছিল নির্বাচন কমিশন। সরকার জোরালোভাবে যার বিরোধিতা করেছে। কিন্তু নির্বাচন কমিশন সরকার ও ক্ষমতাসীন দলকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছে এবং তারা বিজয়ী হয়েছে।
তারা সরকার কিংবা ক্ষমতাসীন দলকে ভয় পায় না। সরকারি দলের বিরোধিতার পরেও বেশ কয়েকটি ঘটনায় তারা বিজয়ী হয়েছে। আমরা মনে করি, অতীতের মতোই সরকারি যে কোনো পদক্ষেপ সাহসের সঙ্গে মোকাবিলা করতে পারবে নির্বাচন কমিশন, যোগ করেন যুক্তরাষ্ট্রের টেনেট ফাইন্যান্স ইন্টারন্যাশনাল গ্রুপের এই প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান।
তিনি বলেন, আমি সবাইকে স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র ও জাপান থেকে আমরা তিন প্রতিনিধি এসেছি। এই তিন দেশই বাংলাদেশের বন্ধু ও উন্নয়ন সহযোগী। কাজেই বাংলাদেশে একটি অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন হলে তাতে আমাদেরও স্বার্থ রয়েছে। আমরা সবাইকে নির্বাচনে অংশ নিতে উৎসাহিত করছি। বিএনপি আমাদের সঙ্গে বৈঠক বাতিল করেছে। কিন্তু দলটির সদস্যদের সঙ্গে আমাদের বেশ কয়েকবার আলোচনা হয়েছে। তারা নির্বাচনে অংশ নেবে বলে আমাদের আভাস দিয়েছে। সরকারি দলের প্রতিনিধি বলেছেন, তারাও বিএনপিকে নির্বাচনে অংশ নিতে উৎসাহিত করছেন। তারা মনে করেন, সরকার ও পার্লামেন্টে দলটি তার বৈধ ভূমিকা রাখতে পারে।
টেরি ইসলি বলেন, বিএনপি যদি আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ না-ও করে, তবে দলটির অনেক সদস্য বলেছেন, তারা নির্বাচনে অংশ নেবে।
বিএনপির সেই সদস্য কারা, জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, আমি তাদের নাম বলতে পারবো না। আমরা গোপনীয়ভাবে অনেক কিছু করি, যা আপনারা বুঝতে পারবেন না। নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা হওয়ার পর সংবিধান অনুসারে পুলিশ বিভাগসহ নির্বাচনসংশ্লিষ্ট সব বিভাগের নিয়ন্ত্রণ চলে যাবে নির্বাচন কমিশনের হাতে। যে কারণে ক্ষমতাসীন সরকার কোনো পুলিশ কর্মকর্তাকে বরখাস্তও করতে পারবে না, পদায়নও করতে পারবে না।