হামিদুল আলম সখা
১৯৫৪ সালে দেশ বিভাগের পর প্রথম সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।তবে ১৯৪৭ সালের ভারত কে বিভক্ত করে দুটি রাষ্ট্র তৈরি করা হয়।একটি ভারত অন্যটি পাকিস্তান। পাকিস্তানের আবার দুটি অংশ একটি পূর্ব পাকিস্তান অন্যটি পশ্চিম পাকিস্তান। নতুন রাষ্ট্রের সৃষ্টি হয়েছে মূলতঃ ধর্মের ভিত্তিতে অর্থাৎ দ্বিজাতিতত্ত্বের ভিত্তিতে। মুসলমান সংখ্যাগরিষ্ঠ এলাকা পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তান।এ দুটি রাষ্ট্রের প্রধান হলেন কায়েদে আজম মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ।তাকে পাকিস্তানের জাতির পিতা বলা হতো।
১৯৪৮ সালে পাকিস্তানের জাতির পিতা বিমাতাসূলভ আচরণ করলেন পূর্ব পাকিস্তানের বাঙালিদের সাথে। তিনি ঘোষণা করলেন , ” উর্দু এন্ড উর্দু সেল বি ষ্ট্যাট ল্যাংগুয়েজ অব পাকিস্তান।” বাঙালির হৃদয়ে প্রথম আঘাত আসলো। পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগের তরুণ নেতা শেখ মুজিবুর রহমান নেতৃত্ব দিলেন রাষ্ট্র ভাষা প্রতিষ্ঠার জন্য।জেলে গেলেন ।ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সংগ্রাম পরিষদ গঠিত হলো।সংগ্রাম পরিষদের নেতা – কর্মীরা ঢাকা মেডিকেল এর প্রিজন সেলে বঙ্গবন্ধুর কাছে আসতো। গোপনে পরামর্শ নিতো।শেখ মুজিবুর রহমান রাষ্ট্র ভাষার দাবিতে অনশন শুরু করলেন।১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি শাসকদের দেয়া ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের নেতা – কর্মীরা রাজপথে নেমে আসলে তাদের পেটুয়া বাহিনী মিছিলে গুলি করে।গুলিতে শহিদ হন সালাম, রফিক,জব্বার, শফিক,বরকতসহ নাম না জানা অনেকে। বাঙালির রক্তের বিনিময়ে প্রতিষ্ঠা পায় রাষ্ট্রভাষা বাংলা।
” আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি”- আব্দুল গাফফার চৌধুরী।
১৯৫৪ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ক্ষমতাসীন মুসলিম লীগ এর বিরুদ্ধে নির্বাচনে অংশ গ্রহন করে “যুক্তফ্রন্ট”।শেরে বাংলা ফজলুল হক, মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী ও সোহরাওয়ার্দীর নেতৃত্বে যুক্তফ্রন্ট এর নৌকা প্রতীক নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে জয়লাভ করে।
যে কথাটি শুরুতেই বলেছিলাম “নৌকা” প্রতীক একটি ব্রান্ডে পরিণত হয়েছে।১৯৭০,১৯৭৩,১৯৭৯,১৯৮৬, ১৯৮৮,১৯৯১,১৯৯৬,২০০১,২০০৮,২০১৪, ২০১৮ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গণমানুষের প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে নৌকা,একটি ব্রান্ডে পরিণত হয়েছে।নৌকা প্রতীক পেলে প্রার্থীরা স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে।নৌকা হলো জয়ের প্রতীক।
তাই তো এবারও দেখা যাচ্ছে নৌকার কোন বিকল্প নেই। বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ এর প্রতীক নৌকা নিয়ে নির্বাচন করছে। এবারও এই নৌকা নিয়ে নির্বাচন করছে জাতীয় পার্টি,জাসদ,ওয়ার্কার্স পার্টি সহ অনেক দল।
নৌকা গণতন্ত্রের, নৌকা মুক্তিযুদ্ধের।
বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ এর সভাপতি প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা বলেছেন নৌকা জয়লাভ করলে দেশের উন্নয়ন হয়।অবশ্য এটা গত ১৫ বছরে প্রমাণিত হয়েছে।
বাংলাদেশ এখন বিশ্বের নিকট একটি ঈর্ষণীয় দেশ। খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ, বিদ্যুৎ এ স্বয়ংসম্পূর্ণ, মানবসম্পদ উন্নয়নে স্বয়ংসম্পূর্ণ। অভূতপূর্ব যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন হয়েছে। ইতোমধ্যেই মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে পরিগণিত হয়েছে বাংলাদেশ। স্মার্ট বাংলাদেশের দিকে ছুটে চলছে জাতি।
বাংলাদেশের বুদ্ধিজীবী, সাংবাদিক,শিক্ষক ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ মনে করছেন ৭জানুয়ারি ২০২৪ এর জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন পেয়ে সরকার গঠন করবে।
#
লেখক: সদস্য,বন ও পরিবেশ বিষয়ক উপ কমিটি। ।সাধারণ সম্পাদক,সহযোদ্ধা একাত্তর।।সহ সভাপতি, ঢাকা মহানগর বঙ্গবন্ধু পরিষদ।।