নিজস্ব প্রতিবেদন: দেশের পেঁয়াজের বাজার বেশি কিছু দিন করে অস্থির। এরই মধ্যে দাম না কমলে আমদানির হুঁশিয়ারি দেয় সরকার। ফলে আমদানির আশঙ্কায় দেশের সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জে পেঁয়াজের দামের কমতে শুরু করেছে। সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতিকেজি পেঁয়াজের দাম ৩ থেকে ৫ টাকা কমেছে। তবে লাগামহীন আদার দর।
দেশের কৃষকদের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিতে গত ১৫ মার্চ থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ করে সরকার। এরই মধ্যে আমদানি করা পেঁয়াজের মজুত প্রায় শেষ হয়ে আসে। ফলে এ মাসের শুরুতে বাজারে দেশি পেঁয়াজের দাম বাড়তে শুরু করে। এতে গত সপ্তাহের শেষদিকে খাতুনগঞ্জের পাইকারি বাজারে পেঁয়াজের দর ওঠে প্রতিকেজি ৭৭ থেকে ৭৮ টাকা পর্যন্ত।
এমন পরিস্থিতিতে পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দেয়া হতে পারে–এমন খবরে এ সপ্তাহে পাইকারি পর্যায়ে প্রতিকেজি পেঁয়াজের দাম ৩ থেকে ৫ টাকা পর্যন্ত কমেছে। বর্তমানে প্রতিকেজি পেঁয়াজ ৭২ থেকে ৭৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
পেঁয়াজের দাম কিছুটা কমার বিষয়ে খাতুনগঞ্জের এক পেঁয়াজ ব্যবসায়ী বলেন, গত সপ্তাহে প্রতিকেজি পেঁয়াজের দর ছিল ৭৮ টাকা। অবশ্য কেউ কেউ ৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করতে চেয়েছেন, কিন্তু কেউ ওই দরে কিনতে রাজি হননি। তবে আমদানির খবরে বাজারটা একটু নিম্নমুখী। পাশাপাশি কৃষকরাও তাদের মজুত করা পেঁয়াজ বিক্রি করা শুরু করেছেন।
এদিকে কোরবানির ঈদ সামনে রেখে এবার সংকট দেখা যাচ্ছে আদার বাজারে। খাতুনগঞ্জে কাঁচা পণ্যের দোকানগুলোতে আদার মজুত খুবই কম। ব্যবসায়ীরা জানান, প্রতিদিন এখানে গড়ে ৭০০ থেকে ৮০০ বস্তা আদা প্রয়োজন হয়, সেখানে বর্তমানে সরবরাহ হচ্ছে ২০০ থেকে আড়াইশ বস্তা। যার মূল কারণ হচ্ছে আদা রফতানিকারক দেশ চীন, মিয়ানমার, ভিয়েতনাম থেকে আদা আসা প্রায় বন্ধ।
ফলে বর্তমানে খাতুগঞ্জে সিলং আদা ১৭০ টাকা এবং ইন্দোনেশিয়ার আদা ২৪০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। আদার দাম চড়া থাকার বিষয়ে এক পাইকারি ব্যবসায়ী বলেন, আদার সরবরাহ কম বিধায় দাম বেশি। এ ছাড়া অন্যান্য দেশ যেমন: ভিয়েতনাম, থাইল্যান্ডে আদার দাম অনেক বেশি। সুতরাং আদার দাম আন্তর্জাতিক বাজারেই বাড়তি।
তবে পাইকারি বাজারে রসুনের দাম পড়তির দিকে। খাতুনগঞ্জের এক রসুন ব্যবসায়ী বলেন, অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় মোখার আগে রসুনের কেজি ছিল ১২৫ টাকা। বর্তমানে তা কমে ১০৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া বাজারে দেশি রসুন নেই।
এদিকে বেশ কয়েক মাস ধরে অস্থির ভোজ্যতেল ও চিনির পাইকারি দাম কমতে শুরু করলেও মিল মালিকদের পর্যাপ্ত পণ্য সরবরাহ না করার অভিযোগ করেন পাইকারি ব্যবসায়ীরা। বর্তমানে এ বাজারে সয়াবিন তেলের মণ ৬ হাজার ৫৫০ টাকা. যা গত সপ্তাহে ৬ হাজার ৭০০ টাকা পর্যন্ত ছিল। এ ছাড়া খাতুনগঞ্জে সব ধরনের ডালের দাম ২ থেকে ৩ টাকা কমেছে।