আন্তর্জাতিক ডেস্ক:সুদানে ৩ মাস ধরে চলমান সংঘাতে মৃতের সংখ্যা দুই হাজার ছাড়িয়েছে। শুক্রবার (১৬ জুন ) এএফপির প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানা যায়।
সংঘাতের অবস্থান এবং ইভেন্ট ডেটা প্রকল্পের সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুসারে, জুন মাসের ৯ তারিখ পর্যন্ত সুদান সংঘাতে মৃতের সংখ্যা দুই হাজার ছাড়িয়েছে।
চলতি বছরের ১৫ এপ্রিল থেকে আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহানের নেতৃত্বে দেশটির সেনাবাহিনী এবং সাবেক ডেপুটি মোহাম্মদ হামদান দাগলোর নেতৃত্বে আধা সামরিক বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের (আরএসএফ) মধ্যে সংঘাত শুরু হয়।
আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা জানিয়েছে, সুদানের সংঘাতে এখন পর্যন্ত দেশটির ২২ লাখ বাসিন্দা দেশ ছেড়ে পালিয়েছে। যার মধ্যে ৫ লাখ ২৮ হাজার বাসিন্দা প্রতিবেশী দেশগুলোতে আশ্রয় নিয়েছেন।
খার্তুম থেকে পালিয়ে আসা এক বাসিন্দা মোহাম্মদ আল-হাসান ওথমান এএফপিকে বলেছেন, ‘আমরা এই যুদ্ধকে এত দীর্ঘ হতে দেখবো ভাবিনি। আমাদের জীবনের সবকিছুই বদলে গেছে। আমরা জানি না যে আমরা কখনো বাড়ি ফিরে নতুন জীবন শুরু করতে পারবো কি না।’
এদিকে গত বুধবার ( ১৪জুন ) সুদানের পূর্ব দারফুরের আঞ্চলিক গভর্নর খামিস আবাকারকে অপহরণ করে হত্যা করেছে দেশটির আধাসামরিক বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্স (আরএসএফ)।
পূর্ব দারফুরের নিহত গভর্নর খামিস আবাকার লড়াইয়ের শুরু থেকেই আরএসএফের সমালোচনা করে আসছিলেন। তিনি এই বাহিনীর বিরুদ্ধে ‘গণহত্যার’ অভিযোগও তুলেছিলেন। প্রকাশ্যে সমালোচনা করার কয়েক ঘণ্টা পরই রাজ্যের গভর্নর হয়েও প্রাণ হারিয়েছেন তিনি।
এদিকে সুদানের সেনাবাহিনীর দাবি করেছে, পূর্ব দারফুরের গভর্নরকে প্রথমে তুলে নিয়ে যায় আরএসএফ। এরপর তাকে হত্যা করা হয়।
দারফুর অঞ্চলের গভর্নর মিনি আরকো মিনাউই বলেন, একটি টেলিভিশন স্টেশনে সাক্ষাৎকার দেয়ার কয়েক ঘণ্টা পর খামিস আবাকারকে অপহরণ করে হত্যা করা হয়। এর আগে বুধবার আল হাদাথ টিভিকে আবাকার বলেছিলেন, বেসামরিক নাগরিকদের হত্যা করা হচ্ছে। আন্তর্জাতিক হস্তক্ষেপ প্রয়োজন।
এদিকে জাতিসংঘের চিফ এইড মার্টিন গ্রিফিথস সতর্ক করে বলেছেন, দারফুরের পরিস্থিতি খুব দ্রত বিপর্যয়ের দিকে যাচ্ছে।
দারফুরে সহিংসতার নিন্দা জানিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্ট বলেছে, দারফুরের সহিংসতা ২০ বছর আগের রক্তাক্ত স্মৃতিকে মনে করিয়ে দিচ্ছে যেখানে কয়েক লাখ মানুষ মারা গেছিলো।
মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেছেন, আমেরিকা চলমান সংঘাতে সুদানে মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং অপব্যবহার এবং ভয়াবহ সহিংসতার নিন্দা জানিয়েছেন। বিশেষ করে দেশটির পশ্চিম দারফুরে সেনাবাহিনী ও আরএসএফের জাতিগত হত্যা ও যৌন সহিংসতার নিন্দা জানায় যুক্তরাষ্ট্র।
ম্যাথিউ মিলার বলেন, তিন মাসের যুদ্ধে শুধুমাত্র পশ্চিম দারফুরের রাজধানী এল জেনেইনায় ১১০০ বেসামরিক নিহত হয়েছে। আর এই অঞ্চল থেকে ২ লাখ ৭৩ হাজারেরও বেশি বাসিন্দা বাস্তুচ্যুত হয়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ।